ছোট্ট শিশুটি বোঝে না কেন সে নানীর সাথে আদালতে বসে আছে। আজ তার মায়ের খুনের বিচারের রায় হবে। চট্টগ্রাম নগরীর সদরঘাটে নির্মম হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছিল ২০১৭ সালে ১৫ জানুয়ারির দুপুরে। স্ত্রী ইতি বেগমকে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে দিয়েছিল স্বামী সানু মিয়া। সে সময় শিশু হামদু মিয়ার বয়স ছিল এক বছর চৌদ্দ মাস। প্রায় ৪ বছরের বিচার প্রক্রিয়ার পর আসামি স্বামী সানু মিয়াকে মৃত্যু না হওয়া স্বামীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃতুদণ্ডের রায় দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-৭। সেই সাথে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-৭ এর বিজ্ঞ বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মুন্সী আব্দুল মজিদের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল ৭-এর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) খন্দকার আরিফুল আলম বিষয়য়টি নিশ্চিত করেছেন।
চট্টগ্রাম নগরীর সদরঘাটে নির্মম হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছিল ২০১৭ সালে ১৫ জানুয়ারির দুপুরে। স্ত্রী ইতি বেগমকে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে দিয়েছিল স্বামী সানু মিয়া। সে সময় শিশু হামদু মিয়ার বয়স ছিল এক বছর চৌদ্দ মাস। প্রায় ৩ বছরের বিচার প্রক্রিয়ার পর আসামি স্বামীকে মৃত্যু না হওয়া স্বামীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃতুদণ্ডের রায় দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-৭।
স্ত্রী খুনের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম সানু মিয়া। সে চট্টগ্রাম নগরীর সদরঘাটের মো. সিরাজ মিয়ার ছেলে। খুনের দিন থেকে গ্রেপ্তার ছিল সে। রায় ঘোষণার সময় হাজত থেকে এনে তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
স্ত্রী খুনের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম সানু মিয়া। সে চট্টগ্রাম নগরীর সদরঘাটের মো. সিরাজ মিয়ার ছেলে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল ৭-এর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) খন্দকার আরিফুল আলম বলেন, বিচার প্রক্রিয়ায় ১২ জন সাক্ষীর মধ্যে ৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা সাক্ষীদের জেরা করেছেন। মামলার সাক্ষীদের পর্যবেক্ষণ জেরা জবানবন্দি শেষে আসামি সানু মিয়া সন্দেহাতীতভাবে দোষী প্রমাণিত হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-৭ এর বিজ্ঞ বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মুন্সী আব্দুল মজিদের আদালত হাইকোর্টের অনুমোদন সাপেক্ষে আসামিকে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন। সাথে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও আসামির কাছ থেকে জরিমানা আদায় করে আদালতে জমা দিতে ডিসিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলার বর্ণণা দিয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল ৭-এর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) খন্দকার আরিফুল আলম উইম্যানভয়েসবিডিকে বলেন, আসামি সানু মিয়া স্ত্রীকে যৌতুকের জন্য প্রায় নির্যাতন করতেন। বিষয়টি প্রতিবেশীরাও জানত। ঘটনার দিন ২০১৭ সালের ১৫ জানুয়ারি দুপুরে আসামি সানু মিয়া স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার পর ওড়না দিয়ে ঝুলিয়ে রাখে। খুন করার পর বিষয়টিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে চেষ্টা করে সানু মিয়া। সানু মিয়াকে আটকে রেখে এলাকাবাসীরা খবর দিলে সদরঘাট থানা পুলিশ এসে গ্রেপ্তার করে আসামি সানু মিয়াকে। ওইদিনই নিহতে ইতি বেগমের বোন খুরশিদা আক্তার বাদি হয়ে সদরঘাট থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ১১ (ক) ধারায় মামলা দায়ের করেন। ঘটনাটি তদন্ত করে ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় সদরঘাট থানা পুলিশ।
নিহত ইতি বেগমের মা রোকেয়া বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে উইম্যানভয়েসবিডিকে বলেন, ‘আমার বলার ভাষা নেই আজ। আমার মেয়েকে নৃশংসভাবে খুন করেছিল সানু মিয়া। খুন করে তারা আত্মহত্যা প্রচারের চেষ্টা করেছিল। আজ সারদিন রায়ের জন্য আদালতে অপেক্ষা করেছি। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের প্রতি আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। আদালতের কাছে ন্যায়বিচার পেয়ে আমি খুশি। ছোট ছেলেটি এখনও বোঝে না তার বাবাই খুন করেছে তার মাকে। আজ আদালতে সারাদিন আমার সাথে সেও ছিল।’