বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা পড়তে চেয়েছিলেন রোজেল কাজী কারণ ছবি আাঁকার প্রতিই ছিল তার ঝোঁক। সেটি যখন হয়ে ওঠেনি তুলি হিসেবে বেছে নিলেন ক্যামেরাকে। শুরুর দিকে সেটিও অতো সহজ ছিল না তার জন্য। শখের জন্য বন্ধুদের ক্যামেরায় ছবি তুলতেন তিনি।
টিউশনির টাকা জমিয়ে প্রথম ক্যামেরা কেনেন ২০১৫ সালে। সে থেকেই তিনি পরিচিতি পেয়েছিলেন। আলোকচিত্রের জগতে তাঁর পরিচিতি রোজেল কাজী নামে। সম্প্রতি নেচার ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতায় বিশ্বের ১৫৮টি দেশের এক লাখ প্রতিযোগীকে পেছনে রেখে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন বাংলাদেশের কাজী আরিফুজ্জামান।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর এ প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক দ্য নেচার কনজারভেন্সি ফটো কনটেস্ট- ২০২১ ওয়াটার ক্যাটাগরিতে প্রথম পুরস্কার জিতেন। বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ানসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পত্রিকার পাতায় ভাসছে তার তোলা সেই ছবিটিতে জীবন ও সংস্কৃতির সাথে পানির সম্পর্ক ফুঁটিয়ে তুলেছেন।
উইম্যানভয়েসের সাথে আলাপচারিতায় তিনি বলেছেন, ছবি তোলায়ি তিনি কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেননি। নিজের ভুল থেকে শিখেছেন নিজেই। ভুল করে বারবার সংশোধন করতেন নিজেকে।
কাজী আরিফুজ্জামানের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের পশ্চিম মেড্ডার পিরবাড়ি। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন।এছাড়াও দেশে এবং দেশের বাইরে ফটোগ্রাফির বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পুরস্কৃত হয়েছেন তিনি।
এই প্রাপ্তিতে কাজী আরিফুজ্জামান এর অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই পুস্কার প্রাপ্তিতে আমি খুবই আনন্দিত। এই প্রাপ্তি উৎসর্গ করতে চাই আমার দুই বন্ধু শাওন ও তারিফকে। যাদের ক্যামেরায় আমার ছবির হাতেখড়ি, সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।
তার দুই বন্ধু শাওন ও তারিফ বলেন, আমরা রোজেল এর মধ্যে ফটোগ্রাফি নিয়ে একটা প্যাশন সবসময় দেখতে পেয়েছি, আমরা বিশ্বাস করি সে আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে।তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিশ্বের প্রত্যেকটা মিডিয়া এই ফটো কনটেস্ট এবং রোজেল এর প্রাপ্তি নিয়ে লিখছে কিন্তু প্রায় এক সপ্তাহ হলো দেশীয় একটি ইংরেজি পত্রিকা ছাড়া কেউই এটা নিয়ে নিউজ করলো না।
উল্লেখ্য, জলবায়ু নিয়ে কাজ করা দ্য নেচার কনজারভেন্সি মোট চারটি ক্যাটাগরিতে এই ছবি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে, ক্যাটাগরিগুলো হল ল্যান্ডস্কেপ, পিপল এন্ড নেচার,ওয়াটার, এবং ওয়াইল্ড লাইফ। দ্য নেচার কনজারভেন্সি বিশ্বের ৭২টি দেশে ভূমি, পানির সাথে যুক্ত জীব সংরক্ষণে কাজ করে যাচ্ছে। প্রায় চারশত বিজ্ঞানী সংস্থাটির সাথে জড়িত রয়েছে।