বাদির দরখাস্তকে এজাহার গণ্য করে চার্জশিট দেওয়ার নির্দেশ ট্রাইব্যুনালের
আফরোজাকে খুনের পর উঠোনের গর্ত খুঁড়ে লাশ উদ্ধার হওয়ার পরপরই গ্রেপ্তার এড়াতে গা ঢাকা দেয় শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। লাশ উদ্ধারের আগে পরকীয়া প্রচারে ব্যস্ত থাকলেও লাশ উত্তোলনের পর ভোল পাল্টে মামলা থেকে নিজেদের অব্যাহতি চেয়েছে শ্বশুর ও বাপ্পির ভাইসহ পরিবারটি। মামলায় পলাতক হলেও এলাকার নামি হোটেলে সাংবাদিক সম্মেলন করে নিজেরা জড়িত নয় বলে দাবিও করেছিলেন বাপ্পির ভাই। ২৫ অক্টোবর আফরোজার পিতা মো. ইসহাক বাদি হয়ে ৯ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করলে ওই দরখাস্তকে এজাহার গণ্য করে ৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল।
এ ব্যাপারে মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফারুক ইকবাল বলেন, ‘মহেশখালীর আলোচিত ও অত্যন্ত নির্মম ঘটনা আফরোজা হত্যাকান্ড। আমি কক্সবাজারের নারী শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনালের নাম্বার -০২ এ মামলার দরখাস্ত রুজু করলে মাননীয় বিচারক আমার বক্তব্য শুনে বাদির দরখাস্তকে এজাহার হিসেবে গন্য করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ ধারা মতে এসপি,সিআইডিকে চার্জশিট দাখিলের নির্দেশ দেন। এছাড়াও মহেশখালী থানাকে মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করে বিজ্ঞ ট্রাইব্যুনালকেও অবহিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।’
মামলার আসামিরা হল নিহত আফরোজার স্বামী রাকিব হাসান বাপ্পী, তার ১ম স্ত্রী কামিনি আফরিন কংকা, তার বোন জামাই শহিদুল ইসলাম কাজল, মা রোকেয়া হাসান, ভাই আসিফ, পিতা হাসান বশির, ভাই হাসান রাসেল, এহসান ও হাসান আরিফ।
এর আগে আফরোজাকে কোথাও খুঁজে না তার বাবা মো. ইসহাক মহেশখালী থানায় ৫ জনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করে। ওই মামলার প্রেক্ষিতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে আফরোজার মরদেহ উদ্ধার করে। পরে একই মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে গণ্য করেছিল পুলিশ। তবে অন্য আসামিদের নাম যুক্ত না করায় এ নিয়ে বাদির আপত্তি ছিল। পরে ৯ জনকে আসামি করে আদালতে মামলাটি করেন নিহতের পিতা।
এ বিষয়ে এলাকাবাসীরা বলেন, আফরোজার শ্বশুর হাসান বশির এলাকায় প্রভাবশালী। জামাত সমর্থিত তৎকালীন এমপি হামিদুর রহমানের সাথে তার গভীর সখ্যতা। বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগ প্রভাবশালী। ছেলে হাসান আরিফ ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা। অবৈধভাবে প্রভাব বিস্তার করেই মূলত তারা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। আফরোজাকে অমানবিক নির্যাতন করা হত। খুন করে পুতে ফেলার পরও তারা জোর করে পরকীয়া গল্প প্রচার করতে চেয়েছিল। ক্ষমতা আর প্রভাবের দাপটে তারা খুনকে পরকীয়া করে পালিয়েছে বলে প্রচার করতে সফল হয়।
উল্লেখ্য, আফরোজাকে পরকীয়ায় নিখোঁজ ঘোষণার এক সপ্তাহ পর গত ১৭ অক্টোবর রাত ১১ টায় মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের উত্তর নলবিলা গ্রামের শ্বশুরবাড়ির উঠোন খুঁড়ে আফরোজার গলিত লাশ উদ্ধার করে মহেশখালী থানা পুলিশ।
এসএমআর//মহেশখালী