আমাদের সমাজে এখনো আমরা ভালো থাকা বলতে বুঝি শারীরিক সুস্থতাকে। অনেক ক্ষেত্রেই উপেক্ষা করছি মানসিক স্বাস্থ্যকে। কিন্তু, শারীরিক ও মানসিক উভয়ভাবে সুস্থ মানুষকেই প্রকৃত অর্থে সুস্থ বলা যাবে।
কোনো ব্যক্তিকে পরিপূর্ণভাবে ভালো থাকতে হলে প্রয়োজন শারীরিক সুস্থতা, মানসিক সুস্থতা, আবেগময় সুস্থতা ও আধ্যাত্মিক সুস্থতা। এর একটিকে বাদ দিয়ে আমরা সুস্থ জীবনযাপন করতে পারি না। আমরা যদি এই চারটি বিষয় নিয়ে সচেতন হই এবং প্রাত্যহিক জীবনে সঠিক অনুশীলন করে নিজের যত্ন নিতে পারি তাহলে আমরা সুস্থ স্বাভাবিক জীবন উপভোগ করতে পারবো।
চলুন জেনে নিই আমরা কীভাবে চারটি বিষয় নিয়ে সচেতন থাকতে পারি :
শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য যেমন পুষ্টিকর খাবার খাবার খেতে হবে। তেমনি পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে, বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরও আমাদের নানা শারীরিক সমস্যায় পড়তে হয়। তখন চিকিৎসকের সাহায্যে ও পরামর্শে আবার শারীরিকভাবে সুস্থ হয়ে উঠি।
তেমনিভাবে কখনো কখনো জীবনে চলার পথে কিছু পারিপার্শ্বিক অবস্থার সাথে আমরা খাপ খাওয়াতে পারি না। জীবনে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। যা চাই, তা হয়তো পাই না। হতে পারে আমি খুব অল্পতেই রেগে যাচ্ছি। অনেক বেশি মানসিক চাপে থাকি, পারিবারিক বন্ধন মনে হচ্ছে আলগা হয়ে যাচ্ছে, নেশাগ্রস্ত হচ্ছি। স্কুল,কলেজ, অফিসে মানিয়ে নিতে পারছি না। অতীতের কোনো ঘটনা নিয়ে মন খারাপ থাকে, ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত থাকি। যৌন-জীবন নিয়েও নানারকম হতাশা থাকে। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ভয় হয়। সবার সামনে কথা বলা, চাকরির সাক্ষাৎকার, বয়ঃসন্ধিকালের সমস্যা, আত্মবিশ্বাস কম থাকা, আত্মমর্যাদা কম ইত্যাদি নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা থাকে।
এসব সমস্যা আমরা নিজেরা মোকাবিলা করতে পারি না। নিজে নিজে অনেক সময় সমাধান করা যায় না। তখন প্রশিক্ষিত, নির্ভরযোগ্য ও নিরপেক্ষ বন্ধু, জায়গা দরকার হয়। তিনিই আসলে মনোবিদ, থেরাপিস্ট বা কাউন্সেলর।
তিনি বুঝিয়ে দেবেন, কীভাবে আপনি সমস্যার সমাধান করবেন, সমস্যাকে দূরে সরিয়ে না দিয়ে এর মোকাবিলা করবেন। কাউন্সেলর সব ধরনের গোপনীয়তা রক্ষা করে আপনার কথা শুনবে। দেখবেন জীবনের এক ধরনের নির্দেশনা খুঁজে পাচ্ছেন। নিজেই সেটি উপলব্ধি করবেন। জীবনকে সুন্দর ও অর্থবহ মনে হবে।