স্বামী থাকতেই স্ত্রীর দ্বিতীয় বিয়ে? এও কী সম্ভব! এ ত্রিভূজ প্রেম ও বিয়ে প্রতারণার গল্পের শুরু ২০১৩ সালে। ঘটনার বিয়ে করে স্ত্রীকে দেশে রেখে মধ্যপ্রাচ্যে চলে যান স্বামী।মাঝেমধ্যে দেশে আসতেন ঘরে এসেছে তিনটি সন্তানও। এবার দেশে ফিরে স্ত্রীকে না পেয়ে চমকে যান স্বামী। অনেক খোঁজাখুঁজির পর স্ত্রী মিলল তার দ্বিতীয় স্বামীর ঘরে। প্রথম স্বামী প্রথমে নিখোঁজ ডায়েরি পরে মামলা দায়ের করলে স্ত্রী প্রেমিকের সাথে বসবাস করেছেন সেটি স্বীকার করলেও দ্বিতীয়বার বিয়ের কথা অস্বীকার করেছেন। ফলে প্রথম স্বামীর মামলায় ব্যভিচারের দোষে গ্রেপ্তার হয়েছে স্ত্রীর প্রেমিক।
এমন অদ্ভূত ঘটনাটি ঘটেছে চাঁদপুর উপজেলায়। শাহিদুন আক্তার নামের নারীর বিয়ে প্রতারণার শিকার স্বামীর নাম বিল্লাল হোসেন। স্ত্রীর ওই প্রেমিকের নাম মো. সাকিব।
সোমবার (২৮ ডিসেম্বর, ২০২০) বিকেলে চাঁদপুরে বিচারিক হাকিম মো. হাসানুজ্জামানের আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ২২ ধারায় এমন স্বীকারোক্তি দিয়েছেন স্ত্রী শাহিদুন আক্তার। আদালতকে স্ত্রী বলেছেন, স্বামীকে তালাক না দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে নয়। বরং প্রেমিক সাকিবে সাথে কিছুদিন বসবাস করেছিলাম। তবে আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি। এটি আমারই বিয়ে প্রতারণা। আমি আমার প্রথম স্বামীর ঘরে ফিরতে চাই।
ভুক্তভোগী স্বামীর অভিযোগ থেকে জানা যায়, চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার গালিম খাঁ এলাকার শাহ আলমের বড় মেয়ে শাহিদুন আক্তারের (২৩) সঙ্গে কুমিল্লার দাউদকান্দির নসিবদী গ্রামের বিল্লাল হোসেনের বিয়ে হয়। বিগত ২০১৩ সালে বিয়ের পর মধ্যপ্রাচ্যের কাতারে চলে যান স্বামী। মাঝেমধ্যেই দেশে ফিরতেন স্বামী। গত বছর ২০১৯ সালেও স্ত্রীর সাথে সময় কাটাতে দেশে এসেছিলেন স্বামী বিল্লাল।
কিন্তু বিধি বাম। এরই মধ্যে কুমিল্লার হোমনা উপজেলার চান্দেরচর গ্রামের মো. সাকিবের সঙ্গে মুঠোফোনে মন দেওয়া নেওয়া হয় তরুণী শাহিদুন আক্তারের। স্ত্রী শাহিদুন আক্তার আর মো.সাকিবের এ সম্পর্কটি অজানাই ছিল প্রবাসী স্বামী বিল্লালের। তিনি জানতেন না স্ত্রীর বিয়ে প্রতারণার শিকার হচ্ছের তিনি!
২০২০ এর নভেম্বর মাসে শাহিদুন আক্তারের স্বামী বিল্লাল হোসেন কাতার থেকে দেশে ফিরে নিজের তিন সন্তানসহ স্ত্রীকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না। স্ত্রীর বাবার বাড়িতেও ছিল না শাহিদুন। শ্বশুরবাড়িতেও লাপাত্তা। কুমিল্লার দাউদকান্দি থানায় তিনি একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত তিনি শাহিদুনকে খুঁজে পান তার নতুন শ্বশুরবাড়িতে। গত রোববার পুলিশের কাছে সহযোগীতা চান স্বামী বিল্লাল। সোমবার (২৮ ডিসেম্বর, ২০২০) বিল্লালের স্ত্রী ও তার প্রেমিককে আটক করে থানায় নিয়ে আসে কুমিল্লার মতলব উত্তর থানা পুলিশ।
দাম্পত্য পুনরুদ্ধারে মামলা, স্ত্রীকে ফিরে না পেয়ে স্বামীর আত্মহত্যা
এ ব্যাপারে মতলব উত্তর থানার ওসি নাসিরউদ্দিন মৃর্ধা বলেন, ‘প্রথম স্বামীর অভিযোগের ভিত্তিতে শাহিদুন আক্তার ও তার প্রেমিক মো. সাকিবকে থানায় আটক করে নিয়ে আসি। একই দিন বিকেলে তাদের আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় ২২ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন শাহিদুন আক্তার। শাহীদুন আদালতকে বলেন, অন্যের সঙ্গে কিছুদিনের জন্য ঘর বাঁধলেও স্বামী বিল্লাল হোসেনের ঘরে ফিরতে চান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘এ স্বীকারোক্তি রেকর্ড করার পর শাহিদুন আক্তারকে তার নিজ জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। যেহেতু তিনি স্বামী থাকতে দ্বিতীয় বিয়ে করেননি। অন্যদিকে অন্যের স্ত্রী ভাগিয়ে নেওয়ার (ব্যভিচার) অভিযোগে মো. সাকিবকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।’