টাঙ্গাইলের সখিপুরে স্ত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। পরিবারের অভিযোগ, স্বামীর অনৈতিক সম্পর্কে বাধা দেয়ায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছে অভিযুক্ত স্বামী। পুলিশ বলছে, এ বিষয়ে তাদের কাছে কেউ অভিযোগ জানায়নি।
প্রায় ৪ বছর আগে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের বাঁশতৈল এলাকার সোমা আক্তারের সঙ্গে বিয়ে হয় সখিপুরের বোয়ালী গ্রামের সুমেশের ছেলে এরশাদ মিয়ার। বিয়ের দুই বছর পর জন্ম হয় কন্যা সন্তানের। এর কিছুদিন পর থেকেই স্বামীর অনৈতিক সম্পর্কে বাধা দেয়ায় স্ত্রীর ওপর চলতে থাকে শারীরিক নির্যাতন। পরে বিষয়টি নিয়ে দফায় গ্রাম্য সালিশ হলেও হয়নি সুরাহা।
সর্বশেষ গেল ৮ই জানুয়ারি স্বামী-স্ত্রীর কলহ থেকে শারীরিক নির্যাতনে রূপ নিলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম বিষয়টি মিটমাট করেন। তবে তার কিছু সময় পরেই আগুন লাগা অবস্থায় সোমাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার তার মৃত্যু হয়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সোমার বাবার বাড়িতে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এর আগেও এরশাদ সোমাকে লোহার রড দিয়ে ছ্যাঁকাসহ প্রায়ই শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছে অভিযোগ নিহতের পরিবারের। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চান তারা।
সোমার নানি বলেন, এক সপ্তাহ আগে আমার নাতনি আমাকে ফোন করে বলে আমাকে মেরেছে, নিয়ে যাও আমাকে। আমরা যাওয়ার পর মেম্বারের কথায় আমরা তাকে রেখে আসি। পরের শনিবারে পোড়া গেল। আমাকে জানায় তাকে মেরেছে, অত্যাচার করেছে।
স্বজনরা বলেন, তাকে মেরে উলঙ্গ করে শরীরে সুঁই ঢুকিয়েছে। পরে সে পালিয়ে যায়। পরে তাকে ধরে জামাই নিয়ে যায়। আমরা চাই এর সুষ্ঠু বিচার হোক।
এদিকে ঘটনার পর অভিযুক্ত স্বামী এরশাদ ও তার পরিবার পলাতক রয়েছে। তার পরিবারের লোকজন বলছেন অভিযোগ মিথ্যা।
এরশাদের ভাবি সেলিনা জানান, আমার দেবরের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভালো ছিল না। আমার স্বামী বাড়িতে নাই বলে আমার দেবর আমাকে মারতেও যেত। আমি আগুন ও মারামারির বিষয়ে কিছু জানিনা। আমি যেহেতু এলাকায় ছিলাম না আগুন লাগানোর প্রশ্নই উঠে না।
অন্যদিকে সালিশি বৈঠক করা ইউপি সদস্যের দাবি ভাবির সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কের সন্দেহে রান্নাঘরে গিয়ে নিজেই শরীরে আগুন দিয়েছে সোমা।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা ১৫ দিন আগে সালিশ করেছি। তখন মিটমাট হয়েছিল। এক সপ্তাহ পর মেয়ের মা আমাকে ফোন করার পর সেখানে যাই। গিয়ে শুনি সোমাকে আবারও অত্যাচার করেছে তার স্বামী। পরে আবারও আপস হয়। এরমধ্যে শুনি চিৎকার, দৌড়ে গিয়ে দেখি গায়ে আগুন। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। সোমা আমাদের জানায় তার স্বামী তার ভাবি ও অন্য আরেক মেয়ের সঙ্গে প্রেম করে।
এদিকে তদন্তে যাওয়া পুলিশ সদস্যরা কথা বলতে রাজি না হলেও সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলছেন তাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেননি।
সখিপুর থানার ওসি এ.কে সাইদুল হক ভূ্ইঁয়া বলেন, এখনও কোন অভিযোগ করেনি। শাহবাগ ধানায় একটা মামলা হয়েছে শুনেছি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।