বৃহত্তম ভারতে দ্বিতীয় নারী রাষ্ট্রপতি হতে চলেছেন ৬৪ বছর বয়সী দ্রৌপদী মুরমু। ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের মনোনয়নে এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছ থেকে ব্যক্তিগত অনুমোদনের পেয়ে তিনি ভারতের কাগজগুলোর শিরোনাম হয়ে উঠেছেন। টুইটারসহ সোশ্যাল হ্যান্ডলে এখন মুরমুই চর্চার বিষয়। ঝাড়খণ্ড রাজ্যের গভর্নরের পর তিনিই অধিষ্ঠিত হতে যাচ্ছেন ভারতের প্রথম আদিবাসী ও নারী রাষ্ট্রপতি। দরিদ্র থেকে দরিদ্রতম পরিবারে বেড়ে ওঠা এ অসাধারণ নারী তার পুরো জীবন উৎসর্গ করেছেন সেবার ব্রত নিয়ে। তার সম্পর্কে নানা তথ্য ও প্রশংসা লিখে টুইট করেছিলেন স্বয়ং নরেন্দ্র মোদী।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ‘এক মুলাকাত’ নামের একটি সাক্ষাতকার অনুষ্ঠানের উপস্থাপককে উদ্দেশ্য করে মুরমু বলেছিলেন, “আমি দরিদ্রতম দরিদ্র পরিবার থেকে এসেছি এবং কখনোই আশা করিনি যে আমি রাজনীতি করব। পরিবারকে আর্থিক সমর্থন করতে পড়াশোনা করতে এবং একটি স্থায়ী চাকরি পাওয়ার কথাই ভাবতাম ছিল। আমার জীবনে এমন বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে যে কারণে আমি চাকরি ছেড়ে দিয়েছি,” অনুষ্ঠানের হোস্টকে বলেছিলেন।
দ্রৌপদী মুরমু ওড়িশ্যার ময়ূরভঞ্জ জেলার একটি পাবলিক স্কুলে শিক্ষক হিসাবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। তার কথায় “বাচ্চারা যখন বড় হচ্ছিল, আমার কাছে পর্যাপ্ত সময় ছিল এবং আমি কাজ খুঁজছিলাম। আমি বিনা বেতনে একজন শিক্ষক হিসেবে কাজ শুরু করি ও পরে ওডিশ্যার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা গ্রামবাসীদের জীবন মানের উন্নতির জন্য সামাজিক সংগঠনের সাথে কাজ করেছি,”।
রৌপদী মুরমু সব প্রতিকূলতা এবং সাংস্কৃতিক অপমান তুচ্ছ করে এগিয়ে গেছেন। রাজনীতির ক্যারিয়ারের সাথে যুক্ত স্টেরিওটাইপগুলোকে মুছতে চেয়েছেন। সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্য তার কাজ দেখে মুগ্ধ হয়ে মানুষ তাকে সমর্থন দিতে থাকে। ধীরে ধীরে তিনি একজন রাজ্য বিধায়ক এবং পরে মন্ত্রী হন।
দ্রৌপদী মুরমুর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার
২০২০ সালে ভারতের রাঁচিতে ঝাড়খণ্ড যুদ্ধের স্মৃতিসৌধে ১০৮ ফুট লম্বা মাস্তুল নিজে বহন করেন দ্রৌপদী মুরমু।
মুরমু তার সাক্ষাতকারে বলেছিলেন, “আমি এমন একটি সমাজ থেকে এসেছি যেখানে নারী সম্পর্কে ধারণা খুব স্থুল ও অনমনীয়। তারা মেয়ে যদি বাড়ির সীমানার বাইরে যায় সেক্ষেত্রেও সে প্রশ্নের মুখোমুখি হবে। ওই সমাজ নারীর রাজনীতি অংশগ্রহণকে নোংরা ব্যবসা হিসাবে দেখে।
দ্রৌপদী মুরমু ২০০০ সালে রায়রাংপুর থেকে এবং ২০০৯ সালে ময়ুরভঞ্জ থেকে বিজেপির বিধায়ক হিসাবে নির্বাচিত হন। তিনি ২০১৭ সালে রাষ্ট্রপতির প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন। ওড়িশ্যায় বিজেপি-বিজেডি জোটের সময় তিনি বাণিজ্য ও পরিবহন এবং মৎস্য ও পশুপালন মন্ত্রী ছিলেন। ২০১৫ সালে, মুর্মু ঝাড়খণ্ড রাজ্যের প্রথম মহিলা রাজ্যপাল হন।