পুরুষদের জন্য সান্ধ্য কারফিউ, ৬টার পর ঘর থেকে বের হওয়া যাবে না
সন্ধ্যা ৬টার পর পুরুষরা ঘর থেকে বের হতে পারবেন না। পুরুষদের জন্য সান্ধ্য কারফিউ জারির পরামর্শ দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের গ্রিন পার্টির সদস্য জেনি জোন্স। তিনি যুক্তি দিয়েছেন এমন পদক্ষেপ নারীদের জন্য নিরাপদ ও বৈষম্য কমাতে সহায়ক হবে। সারা ইভারার্ড নামের এক নারী খুন হওয়ার ঘটনা ও ঘরোয়া নির্যাতন বিল নিয়ে বিতর্ক চলাকালীন সময়ে যুক্তরাজ্যে হাউস অফ লর্ডসে তিনি এমন বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন।
Organisers of a vigil for Sarah Everard say they've had to cancel the event after police refused to give permission because of lockdown https://t.co/JwdjxPwiDi pic.twitter.com/9RwOOElnC5
— ITV News (@itvnews) March 13, 2021
তিনি বলেন, ‘যে সপ্তাহে সারা ইভারার্ডকে অপহরণ করা হয় লাশ পাওয়ার পর ধারণা করা যায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমি যুক্তি দেব সন্ধ্যা ৬ টার পরে রাস্তায় পুরুষদের জন্য সান্ধ্য কারফিউ তৈরি করে বিল সংশোধন কার যায়। আমার মনে হয় এটি নারীদের অনেক বেশি সুরক্ষিত করবে। ‘
এদিকে সারা ইভারার্ডের লাশ পাওয়ার পর মামলাটি নিয়ে ‘নারীদের প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে একটি সম্মিলিত ক্রোধ ও শোকের জাগরণ হয়েছে। ওই ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে লন্ডনে বসবাসকারী অনেক নারী রাস্তায় হয়রানি বা আক্রান্ত হওয়ার গল্প শেয়ার করেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ।
এদিকে লন্ডনের ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকাকে ব্যারনেস জেনি জোনস বলেছেন, হাউস অফ লর্ডসে মামলাটি নিয়ে মন্তব্য করার পরে তিনি নানারকম হয়রানিমূলক বার্তা পাচ্ছেন। তবে ব্যারনেস জোনসের কথায়, ‘আমি সত্যিই খুশি’ আমার মন্তব্য বিতর্ককে একেবারে জ্বালিয়ে দিয়েছে।
শুক্রবার সকালে তিনি স্কাই নিউজকে বলেন, ‘পুলিশ যখন নারীদের ঘরে থাকার পরামর্শ দেয়, তখন কেউ হট্টগোল করে না। দেখুন আমি যখন পুরুষদের এমন পরামর্শ দিই তখন কী ঘটে? পুরুষরা বুঝতে পারে না যে নারীরা কেমন চাপের মধ্যে রয়েছে।’
Since my comments about a curfew for men to keep women safe, I've had a deluge of misogynistic emails and tweets. Which rather proves my point about the problem being with men …
— Jenny Jones (@GreenJennyJones) March 11, 2021
তিনি বলেন, ‘আমি নারীদের কাছ থেকে বেশ কয়েকটি বার্তা পেয়েছি সেখানে তারার বলেছেন পুরুষদের জন্য সান্ধ্য কারফিউ হলে তারা মুক্ত ও নিরাপদ বোধ করবেন।’
এদিকে ব্রিটিশ মন্ত্রীরা বলেছেন, সারা ইভারার্ড মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার পুরুষদের ‘নারী হয়রানি নিরোধী শিক্ষা’ দেওয়া উচিত কী না তা খতিয়ে দেখছে।
এ বিষয়ে ব্রিটিশ শিক্ষামন্ত্রী মিশেল ডোনেলান বলেন, যে স্কুল ব্যবস্থাটি কেবল একাডেমিক বিষয়ের জন্য নয় বরংমানুষের চরিত্র এবং অন্যের সাথে তাদের মিথস্ক্রিয়ার বিকাশের জন্য।’
হয়রানি বিরোধী শিক্ষার সূচনা করা উচিত কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি অবশ্যই এমন কিছু যা আমরা আবারও লক্ষ্য করে শুরু করতে পারি।’
নিখোঁজ হওয়া এবং সন্দেহভাজন হত্যাকাণ্ডকে একটি ‘বিরল ঘটনা’ বলে দাবি করে ডোনেলান বলেছেন, ‘ সব পুরুষই শিকারী—এমন ভাষা আমাদের বর্জন করা উচিত। পুরুষ হোক বা নারী প্রত্যেককেই রাস্তায় হাঁটতে নিরাপদ বোধ করা উচিত।’
তিনি বলেন, নারীদের আমি আশ্বস্ত হতে বলতে চাই। আমাদের রাস্তাগুলো নিরাপদ। নারীদের জন্য সড়ক নিরাপদ করার এজেন্ডায় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
কী ঘটেছিল সারা ইভারার্ডের সাথে
৩৩ বছর বয়সী মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ সারা ইভারার্ড গত বুধবার (৩ মার্চ) রাত ৯ টার দিকে যুক্তরাজ্যের দক্ষিণ লন্ডনের এক বন্ধুর বাড়ি থেকে ৫০ মিনিটের হাঁটার পথে রওয়ানা হন। দুদিন পর শুক্রবার পুলিশ নিশ্চিত করেছে যে নগরীর দক্ষিণ-পূর্বে ৫০ মাইল (৮০ কিলোমিটার) কাঠের জলাশয়ে একটি লাশ পাওয়া গেছে। এ ঘটনা একটি প্রশ্নের যেন বারবার পুনরাবৃত্তি করছে নারীরা এখনও কেন রাস্তায় নিরাপদ থাকেন না? সারা এভেরার্ডের ভাগ্য বড় অদ্ভূত কারণ তাঁকে হত্যার সন্দেহে গ্রেপ্তার করা সন্দেহভাজন ব্যাক্তিটি যুক্তরাজ্যের এক পুলিশ কর্মকর্তা, যার কাজ হল শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিবিদ এবং কূটনীতিকদের সুরক্ষা দেওয়া।