প্রেমের দোহাই ও বিয়ের প্রলোভন দিয়ে দশম শ্রেণি পড়ুয়া এক স্কুল ছাত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণ করে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার সহদর গ্রামের হাইস্কুল শিক্ষক তৌহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় শনিবার (৫ মার্চ, ২০২২) ভুক্তভোগী স্কুল ছাত্রীর বাবা বাদি হয়ে রাণীশংকৈল থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করেন।
আজ রোববার (১৩ মার্চ, ২০২২) পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযুক্তকে গ্রেফতারে গড়িমসির অভিযোগ এনে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। দুপুর ১২টায় ঠাকুরগাঁও উপজেলার বন্দরে সম্মিলিত ছাত্রজোট ও সম্মিলিত অভিভাবক মহলের ব্যানারে ঘণ্টাব্যপী আন্দোলন করেছেন তারা।
আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অভিভাবকেরা বলেছেন, ‘ঘটনার পর থেকে ধর্ষক শিক্ষকের বিচারের দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করছি আমরা। মামলার এতদিনেও কেন পুলিশ ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করতে পারেনি আমরা তার জবাব চাই। তা না হলে আরও বড় আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। যতক্ষণ না পর্যন্ত ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করে আদালতে না পঠানো হবে এবং ন্যায়বিচার করা হবে আমাদের আন্দোলন চলবে।’
এ সময় আরও ধর্ষণে অভিযুক্তকে গ্রেপ্কার করতে আরও ৬ ঘণ্টা পুলিশকে সময় দেন আন্দোলনকারীরা। পরে তারা ইউএনও কার্যালয়ে মিছিল নিয়ে অবস্থানন নেন। এ সময় ইউএনও জুলকার নাইন স্টিভ থানার ওসির বরাতে বলেন, ‘আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামিকে গ্রেফতার করা হবে।’
কী বলা হয়েছে মামলার অভিযোগে?
অভিযোগে বলা হয়েছে, ফুঁসলিয়ে নাবালক মেয়েকে প্রেমের ফাঁদে ফেলেন ওই হাইস্কুল শিক্ষক তৌহিদুল ইসলাম। ঘটনা জানাজানির পর ভিকটিম স্কুলছাত্রীর বাবা সম্মানের দিক বিবেচনা করে মেয়েকে সামাজিক স্বীকৃতি দিয়ে বিয়ের প্রস্তাব দেন ওই শিক্ষককে। তৌহিদুল বিয়ে করতে চান তবে ১৫ লাখ টাকা যৌতুক চেয়ে বসেন ভিকটিম স্কুল ছাত্রীর বাবার কাছে। ভিকটিম ছাত্রীর বাবা যৌতুকের টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে বিয়ে করতেও বেঁকে বসে ওই স্কুল শিক্ষক।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ লোকজন গত ৩ মার্চ ওই শিক্ষার্থীকে তৌহিদুলের বাড়িতে রেখে আসেন। ওই শিক্ষার্থী বিয়ের দাবিতে ওই বাড়িতে অবস্থান নিলে তৌহিদুল বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে পরদিন ৪ মার্চ তড়িঘড়ি করে অন্যত্র বিয়ে করেন। এ ঘটনায় ওই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা ৫ মার্চ তৌহিদুলের বিচার চেয়ে পৌর শহরে মানববন্ধন করেন। ওইদিনইভিকটিম স্কুল ছাত্রীর বাবা বাদি হয়ে রাণীশংকৈল থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করেন। সেইসঙ্গে ইউএনও এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে ঘটনার বিবরণ দিয়ে স্মারকলিপি প্রেরণ করেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও সহকারী পুলিশ সুপার (রাণীশংকৈল সার্কেল) মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘শিক্ষক তৌহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা যে অভিযোগ করছে তা খতিয়ে দেখা হবে। আসামিকে দ্রুত গ্রেফতারের জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।’