বিশ্বের প্রযুক্তি শিল্পে এখনও পুরুষ কর্মীরা প্রাধান্য পায়। পুরুষের নিয়ন্ত্রণে থাকা প্রযুক্তির দুনিয়ায় নারীদের নিজেদের অবস্থান তৈরি করা যথেষ্টই চ্যালেঞ্জিং।
আপনি যদি প্রযুক্তির শীর্ষস্থানীয় কোম্পানির উচ্চপদগুলোর দিকে লক্ষ্য করেন দেখবেন নারীদের সংখ্যা নিতান্তই নগণ্য। তার মানে এমন নয় যে প্রযুক্তি বিশ্বে নারীরা অযোগ্য। অনেক মেধাবী নারী আছেন যারা প্রতিদিন প্রমাণ করে চলেছেন তারাও এখানে মৌলিক একটি ভূমিকা রাখতে পারেন।
যোগ্যতার নিরিখে আমরা নারীদের তালিকা করছি না তবে কিছু নারী আছেন যারা স্রোতের বিপরীতে হেঁটেও ছুয়েছেন সফলতার চূড়া।
শ্যারল স্যান্ডবার্গ
শ্যারল তার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন গুগল দলে যোগ দিয়ে। ২০০৭ সালে তিনি ফেসবুকের চিফ অপারেটিং অফিসার হন। ২০১২ সালে ফেসবুক পরিচালনা পর্ষদে নির্বাচিত হন। এখন তার নামটিও ফেসবুকের ব্র্যান্ড। তিনি কর্মক্ষেত্রে নারীর প্রতি বৈষম্য দূর করতে অবদান রাখছেন।
সুজান ওয়াজিকি
সুজান পড়াশোনা করেছেন কম্পিউটার সাইন্সে এছাড়াও তিনি ইতিহাস ও সাহিত্যও পড়েছেন। ছাত্রজীবনে তার ব্যবসা ছিল ডো টু ডোর মসলা বিক্রির। সাইন্সে মাস্টার্স শেষ করে তিনিও যোগ দিয়েছিলেন গুগলে। বলা যায় গুগলের শুরু থেকেই তিনি সেখানে ছিলেন। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি ইউটিবের প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব নেন। গুগল যখন ইউটিউব কিনে নেয় তিনিই গুগল ও ইউটিউব দুটি সার্চ ইঞ্জিনকে একত্রিত করতে উদ্যোগ নিয়েছিলেন। আজ দেখুন এ ইন্টারনেটের দুনিয়ায় গুগল ও ইউটিউব সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী ও তথ্যবহুল সার্চ ইঞ্জিনে পরিণত হয়েছে।
অ্যাঞ্জেলা ররেন্ডস
অ্যাঞ্জেলা ররেন্ডস জন্মেছিলেন প্যালেস্টাইনের ইন্ডিয়ানায়। তার বাবা ছিলেন সফল একজন ব্যবসায়ী। তার পড়াশোনা ছিল মার্কেটিং ও মার্চেন্টাইজিং বিষয়ে। বাবার মত তিনিও ছিলেন ব্যবসায়ী অ্যাপলে যোগ দেওয়ার আগ পর্যন্ত। বিশ্বের বড় বড় সংস্থাগুলোতে অ্যপলের তৈরি প্রযুক্তি পণ্য বিক্রিতে তার অবদান অনন্য। প্রযুক্তির দুনিয়ায় অ্যপল হল ট্রিলিয়ন ডলারের প্রতিষ্ঠান। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে এ অসামান্যা নারীই অ্যপলের এক্সিকিউটিভ বোর্ডের একমাত্র নারী যিনি নিজের নামকে প্রযুক্তির পৃথিবীর ক্ষমতাধরদের তালিকায় যুক্ত করে নিয়েছেন।
জিন লু
ব্যবসায়ী বাবা লু শুনজির ব্যবসায়ী মেয়ে জিন লু। জন্মেছেন ১৯৭৮ সালে। লু জিনের বাবা ছিলেন লিনোভো কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা। লু কম্পিউটার সাইন্সে ডিগ্রি নিয়েছেন পেকিং ইউনিভার্সিটি থেকে। ৩৭ বছর বয়সে এসে লড়েছিলেন ব্রেস্ট ক্যন্সারের সাথে। ডিডি শুশিং হল চীনের বিখ্যাত ও বড় প্রযুক্তি পণ্যের কোম্পানি। বলা চলে ৪২ বছর বয়সী এই জিন লুয়ের কারণেই প্রযুক্তি বিশ্বে মাথা উচু করে আছে ডিডি শুশিং। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনি নারীর ক্ষমতায়নে অবদান রাখছেন। তার কোম্পানির ৩৭ শতাংশ কর্মী নারী।
গোয়েন শটেল
গোয়েন শটেল হলেন হাতে কলমে একজন ইঞ্জিনিয়ার। জন্মেছিলেন ১৯৬৩ সালে। তিনি স্পেসএক্সের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী। ২০২০ সালে বিশ্বের ৫৫তম প্রভাবশালী নারী হিসেবে তার নাম তালিকাভুক্ত করে ফোর্বস ম্যাগাজিন। বিশ্বের সেরা স্পেস রকেট ও মহাকাশযান বানায় তার কোম্পনি স্পেসএক্স।
গিনি রমেটি
তার পুরো নাম ভার্জিনিয়া মেরি গিনি রমেটি। তিনিই প্রথম নারী যিনি যুক্তরাষ্ট্রের আইবিএম কোম্পানির প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী হলেন। বলাই বাহুল্য তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আইবিএমের জীবনই যেন ঘুরে গেছে। কোম্পানির বিজনেস স্ট্রাটেজিতে অনেক পরিবর্তন এনেছেন গিনি। তিনি ফোকাস করেছিলেন ক্লাউড কম্পিউটিং ও ডাটা এনালাইসিসে। ফলাফল দেখুন কোম্পানটির আয় বেড়েছে কয়েক গুণ।