ভগ ম্যগাজিনের এই এপ্রিল সংখ্যার প্রচ্ছদ জুড়ে রয়েছেন ১০৬ বছর বয়সী ফিলিপিনো ট্যাটু শিল্পী ওয়াং ওড ওগে। সেই সাথে ভগ ম্যাগাজিনের সব থেকে বয়স্ক মডেলের ইতিহাস তৈরি হল তার মাধ্যমে।
এর আগে ২০২০ সালে, জুডি ডেঞ্চ ৮৫ বছর বয়সে ব্রিটিশ ভোগের সবচেয়ে বয়স্ক প্রচ্ছদ তারকা ছিলেন। ভোগ লিখেছে “মারিয়া, ‘ওয়াং-ওড ওগে’ ফিলিপিনো চেতনার শক্তি এবং সৌন্দর্যের প্রতীক,। তার প্রজন্মের শেষ মানুষ হলেন ওয়াং যিনি কলিঙ্গ উপজাতির ঐতিহ্যকে ত্বকে এঁকেছেন জ্যামিতিক নকশায়। তার নকশায় আছে শক্তি, সাহস ও সৌন্দর্যের প্রতীক।”
চলুন আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিই ১০৬ বছর বয়সী এই ট্যাটু শিল্পীর সাথে।
ওয়াং ওড ওগে
১৯১৭ সালে ফিলিপাইনের একটি পার্বত্য প্রদেশ কলিঙ্গায় জন্মগ্রহণ করেন ওয়াং ওড। বয়সের বলিরেখা ছাপিয়ে নজর কাড়ে তার শরীর জুড়ে থাকা জ্যামিতিক নকশার শৈল্পিক ট্যাটু। ৮০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ট্যটু এঁকে তিনু এখন একজন আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব।
১০৬ বছর বয়সী ওয়াং ওড ওগে পরিচিত মারিয়া ওগে নামেও। ওয়াং ওড ওগে মানুষের ত্বকে ট্যাটু আঁকার কাজ শুরু করেছিলেন কিশোরী বয়স থেকে। তার বাবা ইলিয়াং উইগানের নির্দেশনায় ধীরে ধীরে পটু হয়ে উঠছিলেন ট্যটু শিল্পে। ত্বকে ট্যাটুর প্রচলন হাজার বছরের প্রাচীন ঐতিহ্য। সে ঐতিহ্যকে ধারণ করে সারাবিশ্বে খ্যাতি পেয়েছেন তিনি।
উত্তর ফিলিপাইনের পার্বত্য অঞ্চলের কলিঙ্গ প্রদেশের বাসিন্দা ওয়াং ওড হলেন বাটবুট আদিবাসী জাতির সদস্য। তিনিই সেই প্রথাভাঙ্গা নারী যিনি কৈশোরে ত্বকে ট্যাটু আকা শুরু করে হয়ে যান প্রথম নারী ট্যাটু শিল্পী। তার আগে এই ট্যাটু আঁকার অধিকার ছিল শুধুমাত্র পুরুষের।
একটি বাঁশের লাঠি, পোমেলো গাছের একটি কাঁটা, পানি এবং কয়লা হল তার শিল্পের উপকরণ। তার শৈল্পিক কারুকাজ এগিয়ে যেত জ্যামিতিক নকশায় যা বর্ণনা করে বাটবাট যোদ্ধাদের বীরত্ব। এখন ওয়াং ওডের খ্যাতিতে এই ঐতিহ্য ট্যটু ত্বকে ধারণ করতে চান অনেক আন্তর্জাতিক ট্যাটু প্রেমীরা।
কলিঙ্গ ট্যাটুর ইতিহাস
ফিলিপাইনে ত্বকে ট্যাটু বা উল্কি আঁকার ইতিহাস হাজার বছরের পুরনো। দেশটির বিভিন্ন আদিবাসী গোষ্ঠী এ শিল্পর চর্চা করতেন। হাত দিয়ে চেপে পেরেকের মত সুই দিয়ে গাঁথা হয় একেকটি নকশা। ট্যাটুর ডিজাইন জুড়ে থাকে গাছপালা, প্রাণী ও প্রকৃতির নানা চিত্র। ঐতিহ্যগতভাবে প্রথম দিকে শুধু যোদ্ধাদের ত্বকেই এই ট্যাটু শোভা পেত। যেন যোদ্ধাদের চামড়ায় লেখা হত তাদের বীরত্ব ও অর্জনের ইতিহাস। ধীরে ধীরে তা আদিবাসী নারী পুরুষের জন্য একটি পবিত্র শিল্পের মত হয়ে ওঠে যা একালে এসে মন কেড়েছে পর্যটক ও নানাদেশের ট্যাটুপ্রিয় মানুষের।