ভাই বিদেশে, ভাবীর প্রতি কুনজর দুই দেবরের। শুধু অনৈতিক প্রস্তাব নয় বারবার শরীরে হাত দিয়ে, বেডরুম, গোসলখানায় ঢুকে শারীরিক সম্পর্কের চেষ্টা করে তারা। স্বামীর আপন ভাই এ কারণে পারিবারিক মর্যাদার কথা ভেবে তারা বাইরে প্রকাশ না করে ঘরেই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন। শ্বশুরকে নালিশ করলে ৮৪ বছরের বৃদ্ধ ব্যক্তিও নোংরা ইঙ্গিত করে কথা বলেন পুত্রবধূকে। অতীষ্ট হয়ে একসময় আইনের আশ্রয় নেন ওই প্রবাসীর স্ত্রী। থানায় অভিযোগের পর তারা আরও হিংস্র হয়ে ওঠে। প্রতিশোধ নিতে প্রবাসী স্বামীর টাকায় বানানো বাড়ি থেকে স্ত্রীকে উৎখাত করে তারা। এরপরও ক্ষান্ত হয়নি তারা। ধর্ষণ করে খুনের হুমকি দেওয়া ছাড়াও মামলা দিয়েও নারীকে হয়রানি করছে শ্বশুরসহ পরিবারটি। মূলত অনৈতিক সম্পর্ক তৈরিতে ব্যর্থ হয়েই এমন হিংস্র হয়ে উঠেছে তারা।—উইম্যানভয়েস প্রতিবেদকের কাছে ভিকটিম নারীর জবানবন্দিতে উঠে এসেছে এমন তথ্য।
ঘটনাটি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের শেখের হাট এলাকায়। প্রবাসীর স্ত্রীকে যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণ চেষ্টা করা দুই যুবকের নাম নুরুল আকবর ও দিদারুল আলম। তারা সারভাইবার নারীর আপন দেবর। এ ঘটনায় গত ৯ ডিসেম্বর স্ত্রী-কন্যার নিরাপত্তা চেয়ে ও হয়রানি বন্ধে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন সারভাইবার নারীর প্রবাসী স্বামী।
শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণ চেষ্টার বিবরণ দিয়ে নারগিস বেগম (ছদ্মনাম) বলেন, ‘আমি একজন প্রবাসীর স্ত্রী। ধর্ষণের ভয়ে আমি বেডরুমের মধ্যে সিলমসি (পিতলের পোর্টেবল কমোড) রেখে ঘরের ভেতরই বাথরুম করতাম। ভয়ে রুমের ভেতর থেকে বের হতাম না। তারা আমাকে বলত, ‘তোকে ধর্ষণ করে বাঁশঝাড়ে পুতে দেব। অনেক লোকজন দিয়ে তোকে ধর্ষণ করাব।’ আমার দশ বছরের বিবাহিত জীবনে ওরা আমাকে অনেকবার ধর্ষণ করার চেষ্টা করে। তারা ভাবত যেহেতু আমি প্রবাসীর স্ত্রী তাই এরকম প্রস্তাবে আমার রাজি হওয়া উচিত। আমার শয়নকক্ষে ঢুকে উলঙ্গ শুয়ে থাকত। এ কথাগুলো বাইরে বললে আমাদের সামাজিক সম্মান ক্ষুণ্ন হয় এটা ভেবে আমি ও আমার স্বামী চেয়েছিলাম বিষয়টির সুরাহা পারিবারিকভাবে হোক। আমি শ্বশুরকে আমি নালিশ করলে তিনি আমাকে অত্যন্ত কদর্য ভাষায় বলেছিলেন, ‘আমার ছেলেদের কী দোষ আমারও তোকে ভাল লাগে।’ অনেকটা বাধ্য হয়ে ২০১৭ তে জিডি করি ও ২০১৯ এ আমি থানায় অভিযোগ করি। তার প্রেক্ষিতে আমার দেবর নুরুল আকবরকে আটক করেছিল পুলিশ। এরপর তারা এমন আর করবে না জানিয়ে আপোষনামা করে। কিন্তু ছাড়া পেয়ে তারা আরও উগ্র হয়ে ওঠে। আমার শ্বশুরবাড়িতে থাকা দিনের পর দিন খুবই অনিরাপদ হচ্ছিল। এখন তারা বলছে, ‘আমাকে ধর্ষণ করতে না পারলে আমাকে কেটে ফেলবে।’
কুনজরের পর ধর্ষণ চেষ্টা যেভাবে শুরু হয়েছিল
নারগিস বলেন, তিনি গ্রামের সাধারণ পরিবারের ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা পর্দানশীল নারী। খুব অল্প বয়সেই তার বিয়ে হয়ে যায়। তখন তার ১৬ বা ১৭ বয়স। শ্বশুরবাড়ির সবাইকে মেনে চলা ভালো বউ ছিল নারগিস। নারগিসের বিয়ের সময়ে দুই দেবরই ছিলেন প্রবাসে। দিদারুল ফিরে আসে নারগিসের রিয়ের কিছুদিন পরেই। দিদারুল স্থায়ীভাবেই ফিরে আসে। অন্য দেবর নুরুল আকবর নিজে বিয়ে করার উদ্দেশ্যে দেশে আসে নারগিসের বিয়ের ৫ মাসের মাথায়। ভিন্ন ভিন্ন সময়ে দুজনই নোংরা প্রস্তাব দিয়েছে নারগিসকে। ভাবীর উপর প্রথম কু নজর পড়ে দিদারুলের। পরে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করে নুরুল আকবর।
দেবর দিদারুলের অসভ্য আচরণ ও ধর্ষণ চেষ্টা
দেবর দিদারুলের অসভ্য আচরণ ও ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনার বিবরণ দিয়ে সারভাইবার নারী (প্রবাসীর স্ত্রী) নারগিস বেগম বলেন, ‘আমার খুব কম বয়সেই বিয়ে হয়। এইসএসসি পড়া অবস্থায়। আমি আমার স্বামী ও তার পরিবারের অনুগত ছিলাম। বিয়ের শুরুতে আমাদের কোন সমস্যা ছিল না বলা যায়। বিয়ের চারমাসের মাথায় আমার স্বামী প্রবাসে ফিরে যান।’
তার কিছুদিন পর আমার ছোট দেবর দেশে ফিরে আসে। তার আমার উপর চোখ পড়ে যেদিন আমি সেজে আমার ননশের বাড়ি বেড়াতে যাই। শুরুতে সে আমার ওড়না ধরে টানতো, বারবার স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিত। সে ভাবত স্বামী প্রবাসে থাকলেই তার স্ত্রীর সাথে এরকম আচরণ করা যায়।
আমি বারবার তাকে নিষেধ করতাম। সে আমাকে শারীরিকভাবে চায় সেটা অনেকটা প্রকাশ্যেই বলে। তার নোংরা আচরণগুলোর কথা মুখ দিয়ে উচ্চারণ করতে আমার লজ্জা হয়। কিন্তু এখন আমি নিরুপায় বলতে হচ্ছে।
নারগিস বলেন, ‘একদিন সে আমার গোসলখানায় ঢুকে পড়েছিল। আমি চিৎকার করলে চলে যায়। অন্য একদিন দুপুরে আমার বিছানায় উলঙ্গ হয়ে শুয়ে ছিল। একদিন আমি দুপুরের ঘুম থেকে উঠে দেখি দিদারুল আমার হাতে থাকা চুড়ি তার গোপন অঙ্গে ঢুকিয়ে রাখে। নোংরাভাবে আমাকে বলেছিল এই চুড়ি খুলতে হলে তার শরীরে স্পর্শ পড়বেই। আমার বিয়ের দশ বছরে নিজের শ্বশুর বাড়ির পরিবারের হাতেই এভাবে ধর্ষণ আক্রমণের শিকার হচ্ছিলাম। আমি বারবার শ্বশুরকে (বাবা) বিচার দিতাম। তিনি বেশিরভাগ সময়ে আমাকেই উল্টো দোষারোপ করতেন।’
আমার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা কতটা নোংরা আচরণ করতে পারে তার বিবরণ দিয়ে নারগিস বলেন, আমার শাশুড়ি পাশে থাকা অবস্থায় আমি একদিন শ্বশুরকে আমার দেবর দিদারুলের অনৈতিক আচরণের কথা বলে বিচার দিই। শাশুড়ির সামনেই তিান নোংরা ভাষায় আমাকে বললেন আমার ছেলের কী দোষ আমারও তোকে ভাল লাগে। একথা শোনার পর আমি স্তব্ধ হয়ে যাই। আমার শাশুড়ি বলে উঠলেন, ‘শেখের টেক কাজি অফিস আছে’। পারিবারিকভাবে ওরা কতটা অনৈতিক ও নোংরা হতে পারে সেটা দেখে আমি দিনে দিনে অবাক হয়ে যাই। আমার ভাসুর আমাকে কোনদিন খারাপ নজরে দেখেননি। কিন্তু তিনি আমার সাথে হওয়া অন্যায় আচরণের বিচার না করে উল্টো আমাকে গালাগালি করে। অনেকটা বাধ্য হয়ে আমি আমার স্বামীকে জানাই। আমার স্বামী চেয়েছিলেন পারিবারিকভাবে বিষয়টা সুরাহা করতে। ওই সময় থেকে আমি মূলত ভালো বউয়ের তকমাটা হারাচ্ছিলাম।
নারগিস বলেন, আমাকে দিয়ে যদি বেশি কাজ করাত বা অন্য কোন কষ্ট বা নির্যাতন করলে হয়ত আমি সইতাম। আমার স্বামীর দুই ভাইয়ের আমার প্রতি যে কুনজর। সেটি পূরণ না হওয়ায় তারা দিনে দিনে আরও হিংস্র থেকে হিংস্র হয়ে উঠছিল। আমি ভদ্র পরিবারের মেয়ে।
দেবর নুরুল আকবরের অশ্লীল প্রস্তাব ও শারীরিক নির্যাতন
দেবর নুরুল আকবর কীভাবে তার প্রতি আকৃষ্টতা দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করতে চেয়েছিল তার বর্ণনা দিতে গিয়ে নারগিস বলেন, ‘দুই দেবরের মধ্যে নুরুল আকবর খুবই জঘন্য। সে তার স্ত্রীর সামনেই আমার গায়ে হাত দিতে চাইত। আমার শাশুড়ি যিনি আছেন তিনি আমার সৎ শাশুড়ি শ্বশুরের দ্বিতীয় স্ত্রী। তার কাছে পুত্রবধূর ইজ্জত-আব্রুর কোন মূল্য নেই। নুরুল আকবর দেশে আসে আমার বিয়ের চার বা পাঁচ মাস পর। সে বিয়ে করতেই দেশে এসেছিল।
দেবর নুরুল আকবরকে আমি প্রথম দেখি যখন আমাকে সে বাবার বাড়ি থেকে আনতে যায়।
আমার বাবা মা তার সাথে একা যেতে আমাকে অনুমতি দেয়নি। ওইদিন আমি তার সাথে শ্বশুরবাড়ি ফিরেছিলাম কিন্তু সাথে আমার বড়ভাইও এসেছিল। এতে আকবর এতে সে ক্ষিপ্ত হয়। কিন্তু তখনও আমি তার আসল অভিসন্ধি বুঝতে পারিনাই। আমি তার উদ্দেশ্য টের পেয়ে যাই তার বিয়ের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে। গায়ে হলুদের রাতে সাজগোজ করে যখন স্টেজে উঠি সে সবার সামনে আমাকে জড়িয়ে ধরে। কেউ না বুঝলেও আমি তার উদ্দেশ্য বুঝে যাই ।‘
নারগিস আরও বলেন, নুরুল আকবর যতবার দেশে আসে আমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে চেষ্টা করে। চুমু দেওয়া, জড়িয়ে ধরা, গোপন অঙ্গে হাত দেওয়া তার জন্য ডালভাত। তার স্ত্রী এসব দেখেও না দেখার ভান করে। সে কয়েকবার আমার গোসলখানায় ঢুকে গিয়েছিল। এসব ঘটনা শুনে শুনে আমার স্বামীর প্রবাস জীবন বিষিয়ে গিয়েছিল। আমার স্বামী সবসময় আমাকে নিয়ে দুশ্চিন্তা করতেন।
নুরুল আকবরের নোংরা প্রস্তাবের বর্ণনা দিয়ে নারগিস বলেন, সে আমার স্বামীর দেওয়া তিনটি ফোন কেড়ে নেয় আকবর। তার উদ্দেশ্য আমি যেন আমার স্বামীর সাথে কথা না বলতে পারি। ওই ফোনে তাদের নোংরা আচরণের কিছু প্রমাণ ছিলও। আকবর আমাকে বলত,‘ তুমি আমার পোষা পাখি। তোমার যা লাগে আমার কাছে চাইবা। স্বামীর সাথে এত কিসের কথা। তার সাথে মাসে একবার কথা বলবা। তিন মিনিট। এর বেশি নয়। তোমাকে আমার কথায় চলতে হবে। তুমি আমার পোষা পাখির মত থাকবা।’ নারগিস বলেন—আকবর এমনভাবে কথা বলত মনে হত যেন আকবর আমার স্বামী।
নারগিস বলেন, শ্বশুরকে বললে উল্টো আমাকে গালি দিত। শাশুড়িও ঠিক তেমন। ‘মা..’ শব্দ ছাড়া তারা আমাকে ভালো ভাষায় সম্বোধন করেনি। বিচার করবে দূরের কথা। আপু তখন দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছিল আমার। বাধ্য হয়েই নূরুল আকবরের বিরুদ্ধে গত ২০১৯ এর সেপ্টেম্বরে সীতাকুণ্ড মডেল থানায় অভিযোগ করি। আমার অভিযোগের পর ৫ সেপ্টেম্বর পুলিশ নূরুল আকবরকে আটক করে। আমার দেবর নুরুল আকবর ও আমার শ্বশুর নুরুল কবির সমঝোতা করতে অনুরোধ করলে ওই সময়ের ওসি দেলোয়ার হোসেন সব কিছু শুনে ‘নূরুল আকবর প্রবাসে ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত বাড়িতে অবস্থান না করার শর্ত ও এমন কাজ আর করবে না’ অঙ্গীকার করিয়ে আপোষনামা করেন। ওই ঘটনার পর আরও ফুঁসে উঠে নুরুল আকবর ।
নারগিস বলেন,‘আপু ওইদিন আমি ভয়ে কাঁপছিলাম থানায়। আমি ওসি স্যারকে বলেছিলাম ওকে ছাড়লে সে আমার আরও ক্ষতি করবে। ছাড়া পেয়ে আকবর আরও হিংস্র হয়ে উঠে। সে তখন বলত—এখন আমি আর তোর সাথে শোব না। তোকে অনেক লোক দিয়ে ধর্ষণ করাব। তারপর মেরে বাঁশঝাড়ে গুম করে দেব। আকবর খুব নিম্ন শ্রেণির লোকজনের সাথে ওঠাবসা করে।এ কাজটা সে করতে পারে। সে এখন দোহায় থাকে তবে এখানে তার ভাড়াটে লোক আছে। যাদের সাথে সে দেশে থাকলে মদ গাঁজার আড্ডা দেয়। আমি আমার নিরাপত্তা নিয়ে চরম ঝুঁকিতে। একবার ওরা আমাকে মেরে দাফন করার জন্য কবরও খুড়ে রেখেছিল। আমার শোর চিৎকারে তাদের পরিকল্পনা বিফলে যায়।’
পুত্রবধূর ৮৪ বছরের বৃদ্ধ শ্বশুরের অশ্লীল আচরণ
আমার শ্বশুরের কাছে যতবার ‘বাবা’ বলে ডেকে নালিশ করেছি অতবার উনি আমাকে অশ্লীল গালিগালাজ করেছেন। আমি তো উনাকে বাবা হিসেবেই সম্মান করেছিলাম। তার মূল্য তিনি রাখেননি। অন্যের মেয়ে তার কাছে কেবলই ‘মা..’ হয়েছে মেয়ে নয়।
আমার শ্বশুর নূরুল আলমের পাঁচটি ছেলে ও চারটি মেয়ের মধ্যে আমার স্বামী তৃতীয় সন্তান। আমার শ্বশুরের বয়স এখন ৮৪ বছর। আমার বিয়ের ৩ বছর আগে ২০০৭ সালে আমার শাশুড়ি মারা যান। এরপর তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন। আমার স্বামীর পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে ছোট দুই ভাই নূরুল আকবর ও মো. দিদারুল আলমের কুনজর পড়ে আমার উপর। এদের মধ্যে নূরুল আকবর কাতার প্রবাসী হলেও সে প্রতি বছর ছুটিতে দেশে আসত । সে বাড়ি এলেই আমাকে উত্যক্ত করত। শশুরের কাছে নালিশ দিলেই তিনি বলতেন,আমারও নজর আছে তোর দিকে ছেলেদের কী দোষ?’
এ ঘটনায় আমার স্বামী ভিডিও কল করে আমার শ্বশুরকে। ওই সময় আমার শ্বশুর আমার স্বামীকে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, ‘বহুত দিন ‘কালা ‘ খাইছি, এবার ‘সাদা’ খাইতে মন চায়।’ ৮৪ বছরের বৃদ্ধ পিতার এমনই ব্যবহার ছিল আমাকে নিয়ে।
২০১৯ এ থানায় অভিযোগের পর শ্বশুর নুরুল আলম আরও ক্ষিপ্ত হয় জানিয়ে নারগিস বলেন, ‘থানায় মুচলেকা কেন দিতে হয়েছে এ কারণেই তারা আরও হিংস্র হয়ে যায়। দেখেন আপু উনি (শ্বশুর) বিচার করলে তো আমাকে থানামুখো হতে হত না। বিশ্বাস করেন আপু এ কথাগুলো বলা খুব লজ্জাকর। আমি বাধ্য হয়েই বলছি। স্ত্রীর মৃত্যুর পর বৃদ্ধ বয়সেও তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। তার বয়স এখন ৮৪ বছর। পুত্রবধূদের প্রতি তার গালাগালের ভাষা শুনলে আপনি অবাক হবেন। আমার শ্বশুর প্রতিশোধ নিয়েছেন আমার স্বামীকে ভিটেমাটি ছাড়া করে। শ্বশুর নুরুল আলম আমাদের মাথা গোঁজার আশ্রয় ঘরভিটেটি আমার ননদ কাউছারের নামে করে দিয়েছেন। আমার স্বামীর গড়া বাড়িতে আমি থাকতে পারিনি। ২০২০ এর সেপ্টেম্বরে আমার স্বামী আমাকে সীতাকুণ্ডে ভাড়া বাসা নিয়ে দেয়। সেখানেই আমি আমার মেয়েকে নিয়ে প্রচণ্ড অনিরাপত্তায় আছি।’
নারগিস বলেন, ‘আপু সব মেয়েদের বলবেন প্লিজ। কেউ নোংরা আচরণের শিকার হলে যেন শুরুতেই প্রতিবাদ করে জানিয়ে দেয়। আমরা পারিবারিক বিষয় ভেবে যত লুকাতে চেয়েছি ততটাই ওরা আগ্রাসী হয়েছে। এখন তারা হুমকি দিচ্ছে আমার মেয়েকে অপহরণ করাবে আর আমাকে গণধর্ষণ করাবে। আপু আপনি লিখে রাখেন আমাকে ওরা হয় ধর্ষণ করবে নয় মেরে ফেলবে। প্রতিটা রাত দিন আমি ভয়ে কাটাচ্ছি।’
উইম্যান ভয়েস বিডি প্রতিবেদক সারভাইবার নারীর প্রবাসী স্বামী ওই গ্রামের কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে কথা বললে তারা পুরো ঘটনাটির সত্যতা স্বীকার করেছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্তদের বক্তব্য নিতে তাদের নম্বরে ফোন করা হলে তাদের নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। তবে পরবর্তীতে অভিযুক্ত দিদারুল আলমের সাথে যোগাযোগ হলে এটিকে অসত্য ও তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার বলে দাবি করেছেন।