চট্টগ্রামে কলেজ ছাত্রীকে লিঙ্গ প্রদর্শন করে নোংরা ইংগিত করে যৌন হেনস্থা করে এক ব্যক্তি। ঘটনাটি ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকের কয়েকটি গ্রুপে পোস্ট করেন ওই ছাত্রী। ভিকটিম ছাত্রী অভিযোগ করে বলেন, এটাই প্রথমবার নয় এমন ঘটনা আগেও ঘটেছে। এবার সাহস করে ভিডিও করেছি। ভিকটিম ছাত্রী চট্টগ্রামের মহসীন কলেজের ডিগ্রিতে পড়ছেন বলে জানা যায়। ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের লালখানবাজার এলাকায়। টিউশনি করতে বের হয়ে এমনভাবে যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছেন বলে জানান তিনি।
ভিডিয়ো- https://www.youtube.com/watch?v=vBi_5tiblt8
যৌন নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রী বলেন, ‘এমন বাজে ব্যবহারের শিকার অনেকবার হয়েছি। কখনও লিঙ্গ দেখিয়ে কখনও আজে বাজে কথা বলে। কেউ হয়ত বলবে আমার পোশাক খারাপ ছিল। তাদের জানার সুবিধার্তে আমার বোরকা পরা ছবিটি ফেসবুকে দিয়েছি।’
তিনি বলেন, প্রতিসপ্তাহে একবার দুবার এমন ঘটনা ঘটবেই। এটা একেবারেই প্রাত্যহিক। টিউশনি করতে সকালে বের হলে এমন লোকজনের দেখা মিলবেই।
ওই ছাত্রীর ফেসবুক স্টেটাসটি অবিকল তুলে ধরা হল

আসসালামু আলাইকুম
আমি সীমা (ছদ্মনাম) ডিগ্রি প্রথম বর্ষ ( মহসিন কলেজ)।
এই যে নিচে একটি ভিডিও দিয়েছি, তা আমার সাথে ঘটেছে। নাহ্ এইটা প্রথমবার নয়, অগণিতো বার ঘটেছে। কখনো অঙ্গ প্রদর্শন করে আর নয়তো বা আজে বাজে কথা দিয়ে।
এখন হয়তো কিছু ব্যক্তি বলতে পারে যে আমার পোশাক আশাক খারাপ ছিলো, তাই তাদের সুবিধার্থে আমার নিজের একটি ছবি দিয়েছি।
জি আমি এই ভাবেই পড়াতে যাই প্রতিদিন।
এভাবে যাওয়ার পর ও সপ্তাহে ২ বার হলেও এমন ব্যক্তিদের সাথে পরিচয় হয়। প্রতিদিনই হয়তো চুপ করে আর নয়তো নিচের দিকে তাকিয়ে চলে যেতে হয়। কিন্তু আজ আর পারলাম না, কেন জানেন? কারণ আজ এই ঘটনাটি আমাদের গেটের কিছুটা আগে ঘটেছিল। তাই একটু সাহস করে ভিডিও করা হলো। কিন্তু করে লাভ কি? এমন হাজারো ভিডিও ফেসবুব ইউটিউবে পাওয়া যাবে।
হয়তো অনেকের কাছে এইটা বাজে পোস্ট মনে হবে। কিন্ত এই আমি যখন এই ধরনের কোনো একটি লোকের হাতে ধর্ষণ হয়ে কোনো রাস্তার পাশে আহত বা নিহত হয়ে পড়ে থাকবো, তখন আমাদের সমাজের সুনাগরিক গুলো নিজের ফেসবুকে আমাকে নিয়ে পোস্ট করবে,মিডিয়া নিউজ দিবে আর পুলিশরা বলবে জি দোষী আমাদের আওতায় বা তদন্ত চলছে। এক সপ্তাহ পর নুসরাত,হিরামনি বা ঐ ১১ মাসের বাচ্চার মতো কারো কারো টাইমলাইনে পুরোনো পোস্ট হয়ে পড়ে থাকবো মিডিয়ার পুরোনো খবর।
ওহ হ্যাঁ বলতেই ভুলে গেছি যখন ভিডিওটা করছিলাম তখন লোকটা একটুও ভয় পেলো না বরং উনি আরো বেশি করছিলো। ভিডিওটা বন্ধ করে মিছি মিছি আব্বু ফোন করলাম তখন লোকটা আমাকে বলল যে— স্যরি জাস্ট থিংক স্যরি। তখন মনে হলো কেউ একজন এসে কষিয়ে চড় মারল।
একটা চড় দিই। তখন মনে একটা ভীষণ ইচ্ছা জেগেছিল নুসরাতের হয়ে হীরামনির হয়ে আরও যারা এই দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে।
কিন্তু আমি পারবো না, কেন জানেন?
কারণ আমি মেয়ে। আমি বা আপনি আমরা এমন এক সমাজে বসবাস যেখানে আমাকে আপনাকে শিখিয়েছে যাই হোক না কেন তুমি মাথা উচু করে কিছু বলবা না। কিছু যদি হয়েও যায় তুমি চুপ করে থাকবে। বায় এনি চান্স কিছু বললে সব দোষ তোমারি হবে…. জি এইটা আমারি সমাজের নীতি।
এমন চলছে এমনি চলবে, সাবাস বাংলাদেশ ও তার সমাজ ব্যবস্থা।