মানিকগঞ্জে ৬ তলা ভবনের একটি ফ্ল্যাট থেকে এক বিবাহিত নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে । বুধবার ( ১৩ এপ্রিল ২০২২ ) রাত সাড়ে ৮ টার দিকে নারীর লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ । ঘটনাটি ঘটেছে মানিকগঞ্জের পৌর শহরের উত্তর সেওতা এলাকায় ।
নিহত নারীর নাম সানজিদা আক্তার রূপা (২৫) । পিতা মৃত আনোয়ারা হোসেন । বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর থানার মাহমুদনগর গ্রাম ।
পলাতক স্বামীর নাম সহিদুর রহমান (৩৬) ।তিনি পেশায় ঔষধ ব্যবসায়ী। পিতা জহিরুল ইসলাম । বাড়ি পৌর উপজেলায় পার্শ্ববর্তী বনগ্রাম এলাকায় ।
নিহত নারীর পরিবার দাবি জানায়, সানজিদাকে হত্যা করে স্বামী পালিয়েছেন । বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য স্বামীর হাতে শারীরিকভাবে নির্যাতনের শিকার হতো এই নারী। নিহতের তিন বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে । ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সিআইউ, পিবিআই ,র্যাব , ডিবি সদস্যরা ।
এদিকে মানিকগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর সাহা জানালেন, প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে ওই নারী আত্মহত্যা করতে পারে। তবে ময়নাতদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।
নিহতের বড় ভাই মনিরুল ইসলাম সুমন জানায়, তার বোনের মৃত্যুর খবরটি বিকাল সোয়া ৫টার দিকে বোন জামাইয়ের ভাই নাসির উদ্দিন মোবাইল ফোনে জানান। তিনি অভিযোগ করেন তার বোনকে হত্যার পর গলায় কাপড় পেঁচিয়ে রুমের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছে পালিয়েছে। বোন জামাই বাসসট্যান্ড এলাকায় ট্রমা হাসপাতালের নিচে একটি ওষুধের দোকান করতো। পরিবার নিয়ে বোন জামাই ওই বাসায় ভাড়া থাকতো।
এদিকে নিহতের একমাত্র ভাই মনিরুল ইসলাম সুমন আরও জানান, তার বোন ও বোন জামাইয়ের এটি দ্বিতীয় বিয়ে। বিয়ের পর থেকে তার বোনকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতো। পারিবারিক ও গ্রাম্যভাবে সালিশও হয়েছে একাধিকবার।
প্রতিবেশী ওষুধ কোম্পানিতে চাকরিজীবী আবু তাহেরের স্ত্রী খাদিজা বেগম জানান, নিহতের স্বামী ঘটনার পর থেকে লাশ নামিয়ে দৌঁড়ে চলে যায়। তাদের একমাত্র শিশু সন্তান লাবিবকে একা বাসায় রেখে ঘটনার পর থেকে লাপাত্তা রয়েছে।
পুলিশের ওই কর্মকর্তা জানালেন, ঘটনাটি বিকাল ৫টার আগে পরে যে কোনো সময় ঘটেছে। ঘটনার পরপরই নিহতের স্বামী সহিদ পলাতক রয়েছে। তার ব্যবহৃত মোবাইলটি বন্ধ রয়েছে।
তিনি জানান, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে একটি হত্যা মামলা দায়ের করবে এমনটি জানালেন পুলিশের ওই কর্মকর্তা।