চলচ্চিত্র নির্মাতা অতনু ঘোষের ‘রবিবার’ দেখিয়েছে অতীতের সম্পর্কে তিক্ততার অবসান হয় না। ১৫ বছর পর দেখা হল দুজনের। এক রবিবারে। দুজন মানুষের প্রেম রোমান্স ও সম্পর্কের দ্বন্দ্ব নিয়ে পুরো সিনেমাটির প্লট। সিনেমাটি দেখে আপনি মানব হৃদয়ের চরিত্র নিয়ে ভাবতে বাধ্য হবেন।
ছবিটি মূলত চরিত্রভিত্তিক তাই এটি অভিনয়ভিত্তিকও।
ছবিটি মূলত চরিত্রভিত্তিক তাই এটি অভিনয়ভিত্তিকও। রবিবার সিনেমার ‘সায়নী’ চরিত্রের নিখুঁত অভিনয়শৈলি দিয়ে আন্তর্জাতিক মাদ্রিদ চলচ্চিত্র সম্মাননায় সেরা অভিনেতা হিসেবে ভূষিত হলেন বালাদেশি অভিনেত্রী জয়া আহসান।
বাংলা ছবির দুনিয়ায় এবার ‘রবিবার’ পেল আন্তর্জাতিক মাদ্রিদ চলচ্চিত্র সম্মাননা। আরও একবার ‘সেরা অভিনেতার সম্মান জিতলেন রবিবার ছবির নায়িকা জয়া আহসান। একই উৎসবে ছবিটির পরিচালক অতনু ঘোষ সেরা চিত্রনাট্যকারের পুরস্কারও জিতেছেন। উচ্ছ্বাস নিয়ে সুখবরটি প্রথম গণমাধ্যমকে জানালেন পরিচালক অতনু ঘোষ। তারা দুজনেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সুখবরটি ঘোষণা করেছেন।
অতনু ঘোষ জানালেন, উৎসব কমিটি ঘোষণাটি আগে করলেও স্পেনের করোনা লকডাউনের কারণে ট্রফি আসতে কিছুদিন সময় লাগবে। এ ঘোষণা আসার পর ‘রবিবার’ টিম শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনের বার্তায় ভাসছেন।
এবার‘রবিবার’ ছবিটি ইতিহাস গড়ল প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং জয়া আহসানকে জুটি বানিয়ে। কোন এক ছুটির রবিবার যদি মুখোমুখি করিয়ে দেয় দুই পূর্ব পরিচিতকে? ওই দুই মানুষের সুন্দর একটি অতীত আছে। কোন এক রবিবারে তেমনই দুই মানুষ যদি ঘটনাচক্রে একে অন্যের সামনে এসেই পড়েন তবে কেমন হবে সে সাক্ষাৎ?
আরও একবার সম্মানিত হয়ে কেমন লাগছে জয়ার? অভিনেত্রীর মতে, ‘আমি কৃতজ্ঞ পরিচালক, টিম, দর্শকের কাছে। এ ছবি পটভূমি বিন্যস্ত হয়েছে একটি দিনের ঘটনা নিয়ে। এ সম্মানের নেপথ্যে আমার একার কৃতিত্ব নয়। পরিচালক এ রকম একটি চরিত্র সৃষ্টি না করলে, আমাকে নিংড়ে না নিলে একের পর এক সম্মান পেত না ‘রবিবার’।’
জয়া জানিয়েছেন, অতনুর এই ছবি শুধু মনোরঞ্জনের নয়। ছবিটি গভীরভাবে ভাবায়। আন্তর্জাতিক মানের এই ছবি তাই বিশ্বের দরবারে এত প্রশংসিত।
চলতি বছরের মার্চে ক্রিটিক চয়েজ ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড ২০২০ সেরা কাহিনী এবং সেরা পরিচালনার পুরস্কার দিয়েছে ‘রবিবার’কে। ক্রিটিক চয়েজ ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডস প্রতিবছর দেওয়া হয় সিনে সমালোচক গিল্ড থেকে। এ আয়োজকদের মধ্যে রয়েছেন ভারতের প্রথম সারির সংবাদপত্র, বেতার, টিভিএবং ওয়েবসাইট সমালোচকেরা।
পুরস্কার প্রাপ্তির খবর জানার পর জয়া আহসান তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘এই দুঃসময়ে আমাদের সবার জন্য কী একটা দারুণ সুখবর নিয়ে এলে অতনুদা (অতনু ঘোষ)! অনেক অভিনন্দন তোমাকে, অনেক অনেক ভালোবাসা।
এত এত ছবি আর বাঘা বাঘা অভিনয়শিল্পীর মধ্যে আমার ভাগ্যেই যে পুরস্কারটা এল, সিংহভাগ অবদানই তোমার। এমন একটা ছবি তুমি না বানালে, চরিত্রের জন্য আমার ভেতরটা নিংড়ে না আনলে এ সৌভাগ্য কি আমার হতো? রবিবারের সব শিল্পী আর কুশলীকে আমার হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা।’
জানা গেছে, বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্রে অভিনেত্রী বিভাগে জয়া আহসানের সঙ্গে ১৮ জন অভিনয়শিল্পীর নাম ছিল। সবাইকে পেছনে ফেলে জুরিবোর্ডের বিচারকদের নজর পড়ে জয়া আহসানের অভিনয়ে। তারই প্রতিদান পেলেন তিনি।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা ও প্রথম আলো