রাঙামাটিতে কলেজ ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি ও অনলাইনে ব্যক্তিগত ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় স্থানীয় দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সাইবার আইনে মামলা দায়ের হওয়ার পর আজ রোববার ( ২৬ সেপ্টেম্বর৷ ২০২১) দ্বিতীয় দফায় মানবন্ধন করেছেন রাঙ্গামাটি সরকারি মহিলা কলেজের শতাধিক ছাত্রীসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও। মানববন্ধন শেষে তারা রাঙামাটির জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন।
এ বিষয়ে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান বলেছেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবরে লিখিত স্বারক লিপিটি গ্রহণ করেছি ও আমি সেটি প্রেরণের ব্যবস্থা করছি।’
প্রায় ঘণ্টাব্যপী চলমান ওই মানববন্ধনে বক্তারা বলেছেন, মামলাকে ভিন্ন খাতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে ও এ ঘটনার ইন্ধন ও শক্তিদাতারা জামায়াতের সমর্থনপুষ্ট। এদিকে দোষীরা গ্রেপ্তার না হওয়ার কারণে এরা অজ্ঞাত স্থান থেকে এখনও তাদের কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। মামলার রুজু হওয়ার এতোদিন পার হয়ে গেলেও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বক্তারা।
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে রাঙ্গামাটি সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ এনামুল খন্দকারকে কল করা হলে তিনি বলেন, ‘একজন ছাত্রী সাইবার হয়রানির শিকার হয়ে অভিযোগ করেছেন এ কথা জেনেছি। ছাত্রীরা নিজ উদ্যোগে মানববন্ধন করেছে। তবে মামলা তদন্ত করবে আইন-শৃংখলা বাহিনী। তদন্তে তারা দোষী প্রমাণিত হলে তারা নিশ্চয়ই শাস্তি পাবে।’
এদিকে মামলা দায়ের হওয়ার পরও ভুক্তভোগী ছাত্রীর নামে পুনরায় ফেসবুকে ভুয়া একাউন্ট খুলে তার ছবি প্রকাশ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়ে সংবাদকর্মী ইমতিয়াজ ইমন বলেছেন, ‘ওরা সাংবাদিকতাকে অন্যভাবে এনজয় করছে। ঘটনাগুলোকে পারিবারিক বলে উড়িয়ে দেবার চেষ্টা হলেও অনেকেই জানে ওদের সাথে কেউ দ্বিমত হলেই তাকে নিয়ে ফেসবুকে কুৎসা ছড়ানো হয়। ওরা সম্প্রতি আওয়ামী লীগে নাম লেখালেও ওদের মূল ক্ষমতার উৎস জামায়াত ও মৌলবাদীরা। আমার উপর শোধ তুলতে আমার স্ত্রীকে নিয়ে অনলাইনে এমন নোংরা কথা ছড়াচ্ছে।’
মানববন্ধনে উপস্থিত থেকে রাঙামাটি জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট কল্যাণ মিত্র বলেছেন, সাংবাদিক নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ যেন এমন ন্যক্কারজনক কাজ না করতে পারে। ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী যেন ন্যায়বিচার পায়। এ ব্যপারে আইনশৃংখলা বাহিনীর প্রতি আহবান জানাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাপস রঞ্জন ঘোষ বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। এটি তদন্তের পর্যায়ে রয়েছে।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রেখেছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট কল্যাণ মিত্র চৌধুরী, রাঙ্গামাটি শিক্ষক সমিতির সভাপতি মঈনউদ্দিন ভুইয়া, সমাজসেবক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, মো. সাজ্জাদ হোসেনসহ রাঙ্গামাটি মহিলা কলেজের প্রায় একশো মেয়ে শিক্ষার্থী।
উল্লেখ্য ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রীর দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত দুই সংবাদকর্মীরা হলেন এশিয়ান টেলিভিশনের রাঙামাটি প্রতিনিধি মো. আলমগীর মানিক (৩৮), বাংলাদেশ টেলিভিশনের রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি জাহেদা বেগম (৪০)। অন্য দুই আসামি মাসুদ পারভেজ নির্জন (২৪) ও শহিদুল ইসলাম হৃদয় (২৫) এশিয়ান টিভির প্রতিনিধি আলমগীর মানিকের সহযোগী।