লামার প্রিয়ন্তী চাকমা নামের মেয়েটি ছিল বাবা মায়ের দত্তক নেওয়া মেয়ে। সেদিন রাতের খাবার শেষে ঘুমিয়ে গেছিল পরিবারের সবাই। সকালে কিশোরী প্রিয়ন্তীর লাশ উদ্ধার হয়েছে স্থানীয় একটি পুকুর থেকে। বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১) ভোর পাচটার দিকে কিশোরীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ বলছে সুরতহালে শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন ছিল না।
নিহত কিশোরী প্রিয়ন্তী চাকমা বড় নুনারবিল মার্মা পাড়ার নিক্সন চাকমা ও জ্যোতিকা চাকমার দত্তক মেয়ে।
সে লামা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী। নিহত কিশোরী প্রিয়ন্তী চাকমার বাবা নিক্সন চাকমা লামায় একটি এনজিওতে চাকরী করেন। তারা বড় নুনারবিল মার্মা পাড়ার মংহ্লা প্রু মার্মার ভাড়া বাড়িতে থাকতো। নিক্সন চাকমার নিজ বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা সদরে।
ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করে লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, লাশের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য বান্দরবান জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। সুরতহালে কিশোরীর শরীরে আঘাতের কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
নিহত প্রিয়ন্তীর মা জ্যোতিকা চাকমা বলেন, তারা রাতে খেয়ে যার যার রুমে শুয়ে পড়েছিলেন। ভোরে মানুষের শোরগোল শুনে উঠে দেখে ঘরের দরজা খোলা ও মেয়েটির লাশ ঘরের পাশে একটি পরিত্যক্ত পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রিয়ন্তী ঘুমের মধ্যে হাঁটার অভ্যেস ছিল। সেটিই হয়ত তার মৃত্যুর কারণ
এদিকে প্রতিবেশী এক নারী বলেন, রাত ৩টা ৪৫ মিনিটে তার ঘরের সাথে লাগোয়া পরিত্যক্ত পুকুরের অপর পাড়ে কিছু পড়ার শব্দ পান তিনি। তাড়াতাড়ি মোবাইলের লাইট জ্বালিয়ে বের হয়ে দেখেন কি যেন একটা পানিতে ডুবে যাচ্ছে। তিনি অনেক ডাকাডাকি করলেও আশপাশের কেউ বের হয়নি। তিনি একা ছিলন বলে ভয়ে পানিতে না নেমে ঘরে চলে যান। সকালে ওই স্থান থেকে কিশোরীর লাশ উদ্ধার হয়।
ওই নারীর ভাষ্যে, নিক্সন চাকমা ও জ্যোতিকা চাকমা নিঃসন্তান হওয়ায় তারা মেয়েটিকে ছোট থেকে দত্তক নিয়েছেন। পালক মেয়ে হলেও তারা মেয়েটিকে আপনের মতই ভালবাসতেন।
লামা পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলর জাহানারা বেগম বলেন, আমার বাড়ির পাশের ঘটনা। ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। মেয়েটি অনেক মেধাবী ছিল।