বাংলাদেশে লাল শাক একটি জনপ্রিয় সুস্বাদু শাক। প্রায় সারা বছরই এ শাক পাওয়া যায়। লাল শাকে কার্বোহাইড্রেট, ডায়াটারি ফাইবার, প্রোটিন, মিলিগ্রাম সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি। আর এই সবকটি উপাদানই শরীরের গঠনে ভীষণভাবে কাজে লাগে। বিশেষত ওজন কমাতে, কিডনির ক্ষমতা বাড়াতে, দৃষ্টি শক্তির উন্নতি ঘটাতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে এমনকি জ্বরের চিকিৎসায়ও লাল শাকের তুলনা হয় না।
প্রতিদিন লাল শাক খাওয়া শুরু করলে শরীরের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি-এর ঘাটতি দূর হয়। ফলে রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থা এতটাই শক্তিশালী হয়ে ওঠে যে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।
জ্বরের চিকিৎসায় : আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে যারা জ্বরে ভুগছেন, তারা এই ঘরোয়া পদ্ধতিটির সাহায্য নিতে পারেন। এক্ষেত্রে একটা প্যানে পরিমাণ মতো জল নিয়ে তাতে এক মুঠো লাল শাক ফেলে দিন। তারপর জল ফোটাতে শুরু করুন। যখন দেখবেন ফুটতে ফুটতে জলেরপরিমাণ অর্ধেক হয়ে গেছে, তখন আঁচটা বন্ধ করে দিন। এরপর জল ঠাণ্ডা করে ছেঁকে নিয়ে পান করুন। এমনটা কয়েকদিন করলেই দেখবেন জ্বর পালিয়েছে।
উন্নত দৃষ্টিশক্তি: লাল শাকে থাকা ভিটামিন সি রেটিনার ক্ষমতা বৃদ্ধির মধ্যে দিয়ে সার্বিকভাবে দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই যারা চোখে কম দেখেন বা পরিবারে গ্লুকোমার মতো রোগের ইতিহাস রয়েছে, তারা সময় নষ্ট না করে আজ থেকেই লাল শাক খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন অল্প দিনেই উপকার পাবেন।
হাড় মজবুত হয় : লাল শাকে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন কে, যা হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর একবার হাড় শক্তপোক্ত হয়ে উঠলে অস্টিওপরোসিস মতো হাড়ের রোগ যে আর ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
হার্ট ভালো থাকে : লাল শাকে থাকা “ফাইটোস্টেরল” নামক একটি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর একদিকে যেমন ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে, তেমনি নানাবিধ হার্টের রোগের অ্যান্টিডোট হিসেবেও কাজ করে। সপ্তাহে কম করে ২-৩ দিন যদি লাল শাক খাওয়া যায়, তাহলে হার্টের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
অ্যানিমিয়ার সারে : লাল শাকে এমন কিছু উপাদান থাকে, যা শরীরে লোহিত রক্ত কণিকার মাত্রা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। অ্যানিমিয়া রোগীরা এই শাকটি খেতে পারেন। দুই আঁটি লাল শাককে পিষে রস সংগ্রহ করে তার সঙ্গে ১ চামচ লেবুর রস এবং ১ চামচ মধু মিশিয়ে যদি নিয়মিত খেতে পারেন, তাহলে শরীরে কখনও রক্তের অভাব হবে না।
হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে : লাল শাকে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ফাইবার, যা হজমে সহায়ক অ্যাসিডের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। সেই সঙ্গে বাওয়েল মুভমেন্ট যাতে ঠিক মতো হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বদ-হজমের আশঙ্কা কমে। সেই সঙ্গে গ্যাস-অম্বলের প্রকোপও হ্রাস পায়।