শরিয়তপুরে বিয়ের প্রলোভনে ভালোবাসার ট্র্যাপ, কিশোরীকে ধর্ষণ করে ওষুধ খাইয়ে গর্ভপাত করিয়ে দেয় অভিযুক্ত তরুণ
শরিয়তপুরে ১৫ বছর বয়সী কিশোরীকে প্রথমে উত্যক্ত করত জাহিদুল ব্যপারী নামের এক তরুণ। তারপর গড়ে ওঠে প্রেম। বিয়ের প্রলোভন ও আশ্বাসে বারবার শারীরিক সম্পর্কের সম্মতি আদায় করে ধর্ষণ করে কিশোরীকে। কিশোরী অন্তসত্ত্বা হয়ে পড়লে তাকে নিজের বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের পর ওষুধ খাইয়ে গর্ভপাত করিয়ে দেয় অভিযুক্ত জাহিদুল ব্যাপারী। মেয়েটির বাবা মা জানলে শালিসেই তা সমাধানের চেষ্টা করেন। শালিসে বসে দোষ স্বীকার করার পর অভিযুক্ত তরুণ ও তার পরিবার এখন উল্টো মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে পরিবারটিকে।
বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের শিকার মেয়েটি স্থানীয় শরিয়তপুরের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। অন্যদিকে ধর্ষণে অভিযুক্ত জাহিদুল শরিয়তপুরের কুচাইপট্টি ইউনিয়নের মশুরগাঁও এলাকার সেলিম ব্যাপারীর ছেলে জাহিদুল ব্যাপারী (২২)।
গত (৬ ডিসেম্বর,২০২০) সারভাইভর ছাত্রীর মা ধর্ষণের অভিযোগে গোসাইরহাট থানায় মামলা দায়ের করেন। শরিয়তপুরের সারভাইভর ওই কিশোরীর মা অভিযোগ করে বলেন, ’মামলার ২৬ দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত মামলার আসামি জাহিদুল আটক হয়নি। উল্টো মামলা তুলতে হুমকি দিচ্ছে জাহিদুলের পরিবার।’
এদিকে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, জাহিদুল ব্যাপারী নামের ওই তরুণ কিশোরীকে উত্যক্ত করত। তার স্কুল আসা যাওয়ার পথ রোধ করত। এক পর্যায়ে কিশোরীকে প্রেমের জালে আটকে ফেলে জাহিদুল। ওই কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে জাহিদুল। এক পর্যায়ে কিশোরীকে অনিরাপদ উপায়ে গর্ভপাত করালে কিশোরীর বাবা মা জেনে যায়। বিষয়টি সালিশে সুরাহা করার চেষ্টাও করা হয়। গত ৪ ডিসেম্বর জাহিদুল নিজের বাড়ি ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের পর গর্ভপাতের ওষুধ খাওয়ায় কিশোরীকে।
শরিয়তপুরের সারভাইভর কিশোরী বলেন, স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে জাহিদুল দেখা করতো আমার সঙ্গে। এক বছর যাবত চলেছে সম্পর্ক। বিয়ের প্রলোভন দিয়েই আমার সাথে খারাপ কাজ করেছে। আমার পেটে বাচ্চা চলে আসলে ওষুধ খাইয়ে বাচ্চা নষ্ট করে দেয় জাহিদুল। আমি এর বিচার চাই।
শরিয়তপুরের সারভাইভর কিশোরীর বাবা বলেন, ‘আমার মেয়ের সঙ্গে জাহিদুলের সম্পর্ক আমরা জানতাম না। আমার মেয়েকে ঘর থেকে বের করে নিয়ে খারাপ কাজ করেছে জাহিদুল। বিয়ের প্রলোভন দিয়েছে আমার ছোট মেয়েটিকে। তাই আমরা মামলা করেছি।’
শরিয়তপুরের ধর্ষণে অভিযুক্ত জাহিদুল ব্যাপারীর মা দিপা বেগম বলেন, ‘গত ৪ ডিসেম্বর রাতে আমার ছেলে বাড়িতে ছিল না। মেয়ের পরিবার আমাদের বাড়িতে এসে মেয়েকে ঘরে ঢুকিয়ে তালা মারে। পরে স্থানীয়রা দরবার সালিশ করে।’
শরিয়তপুরের গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা সোহেব আলী বলেন, এই ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। মামলার আসামি জাহিদুল পলাতক। আমরা আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।