৮ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল শিমুর । বিয়ের পর থেকেই পারিবারিক বিবাদ লেগেই থাকত শিমু ও তার শ্বশুরবাড়ির পরিবারের । এ নিয়ে বারংবার হয়েছিল সালিশ বিচার । এ বিবাদের সুরাহ করতে পারেননি এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিরা । হঠাৎ করেই বাড়ির গোয়ালঘর থেকে উদ্ধার হলো শিমুর লাশ । শ্বশুরবাড়ি বলছে আত্মহত্যা পরিবার বলছে হত্যা । পুলিশ লাশ উদ্ধার করার পর থেকে পলাতক রয়েছেন শ্বশুর হারিজ মাঝি ।
আজ বুধবার ( ১৬ মার্চ ২০২২) সকালে লক্ষ্মীপুরের সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের চরমনসা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে । নিহতের নাম শিমু আক্তার(২৩) পৌর উপজেলার ৬ নম্বর ওয়ার্ড কুশাখালী গ্রামের সিরাজ মিয়ার মেয়ে।
শিমুর পরিবার ও স্থানীয়রা যা বলেছেন
নিহত শিমুর পরিবারের দাবি, এটি আত্মহত্যা নয়, পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের মানুষ ওই বাড়িতে ভিড় জমায়। তথ্যমতে প্রায় ৮ বছর আগে চরমনসা গ্রামের ওমান প্রবাসী আবুল বাশারের সঙ্গে শিমুর বিয়ে হয়। তাদের সংসারে শাহাদাত হোসেন নামে ৬ বছরের ছেলে রয়েছে।
বিয়ের পর থেকেই শিমুর সঙ্গে প্রায়ই শ্বশুর হারিছ মাঝি, শাশুড়ি রহিমা বেগম, ননদ সুমি আক্তার, শাবনুর আক্তার ও শাহনাজ আক্তারের সাথে ঝগড়া হত ।
মঙ্গলবার ( ১৫ মার্চ ২০২২ ) রাতেও মোবাইল ফোনে শিমুর শ্বশুরবাড়ির পরিবারের লোকজন বাশারের কাছে শিমুর নামে নালিশ দেয়। এর আগে শ্বশুর-শাশুড়িসহ পরিবারের অন্যরাও তাকে গালমন্দ করে। রাতেই বাশার শ্বশুর-শাশুড়িকে ফোন দিয়ে শিমুর সাথে সংসার করবেন না বলে তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য ধমক দেয়।
ঝগড়ার কারণেই শিমুকে তার শ্বশুর-শাশুড়ি ও ননদরা হত্যা করে পরিকল্পিতভাবে গোয়ালঘরে ফাঁস লাগিয়ে রেখেছে বলে দাবি করে শিমুর পরিবার।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে শিমুর মা বকুল বেগম বলেন, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি। শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। এখন আত্মহত্যা বলে প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমি মেয়ে হত্যার বিচার চাই।’’
ছোট ননদ শাবনুর আক্তার বলেন, আমাদের সঙ্গে কোনো ঝগড়া হয়নি। রাতে একসঙ্গে খাবার খেয়ে ভাবি ঘুমাতে যান। ফজরের নামাজের সময় উঠে ভাবির ঝুলন্ত লাশ দেখতে পেয়েছি। তিনি আত্মহত্যা করেছেন, পরে তার পরিবারকে আমরা খবর দিয়েছি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল আমিন মাঝি বলেন, ওই পরিবারে আগে থেকেই কলহ চলে আসছে। একাধিকবার আমি সালিশ করেছি। মৃত্যুর ঘটনা শুনে ঘটনাস্থল গিয়েছি। কলহের জের ধরেই ঘটনাটি ঘটেছে। তবে হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা বলতে পারছি না।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার এসআই হাবিবুর রহমান বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।