সূর্যাস্ত
অনুবাদ: আবু মুসা চৌধুরী
সূর্য যখন অস্তগামী সে সময়ে,
মৃত পাতায় আগুন জ্বালায় এক রাখাল।
তা কিছুই না, এই অগ্নি
তা এক তুচ্ছ বিষয়, নিয়ন্ত্রিত,
যেন এক স্বৈরাচারীর পরিবার পরিচালন।
এখনো, যখন এটা প্রজ্জ্বলন্ত, রাখালটি অন্তর্হিত,
পথ থেকে অদৃশ্য সে।
সূর্যের তুলনায় এ আগুন
ক্ষণস্থায়ী অপেশাদার—
পাতা ফুরিয়ে গেলেই তো শেষ।
অতঃপর রাখাল ফিরে আসে ফের, ছাই জড়ো করে।
কিন্তু মৃত্যুই হল মৌলিক।
যা করার জন্য আগমন যদিও তা সূর্য করেছে,
মাটি যেন উর্বরা হয়, তারপর
তারপর বসুধার দাহনে অনুপ্রেরণা
অতঃপর এটি যখন ডুবে যায়।
‘ অ্যা ভিলেজ লাইফ’ হল গ্লাকের সর্বশেষ কবিতার বই। এটি ২০১৯ এর সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত হয়েছে। ভূমধ্যসাগরীয় কোন এক গ্রাম ও গ্রামের জীবন এ বইটির মূল উপজীব্য। কবিতাগুলো গ্রাম্য মানুষের সহজ ও কবির ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাকে অন্তর্ভুক্ত করে। লুইস গ্ল্যুক কাব্যের ছলে দারুণ গল্প বলেন। সানসেট (সূর্যাস্ত) কবিতাটি ‘অ্যা ভিলেজ লাইফ’ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া।
জ্বলন্ত পত্রগুচ্ছ
অনুবাদ: আবু মুসা চৌধুরী
এই মৃত পাতাগুলো আগুন ছোয় খুব দ্রুত।
এবং ওগুলো জমে দ্রুততম; বিন্দুমাত্র সময় নেই
কিছু থেকে পাল্টে ওরা কিছুই না হয়ে যায়।
মধ্যাহ্ন। আকাশ ঠান্ডা, নীল,
আগুনের আওতা পৃথিবী ধূসর।
সবকিছু কেমন মিলিয়ে যায় দ্রুত, কী দ্রুত ধোঁয়া পরিস্কার।
কিন্তু যেখানে রয়েছে পত্রালির স্তূপ
মনে হয় অতর্কিতে এক শূন্যতা ছড়িয়ে পড়েছে।
রাস্তার ওপারে, চেয়ে আছে এক বালক।
সে আছে, অনেকক্ষণ, দেখছে পাতা পোড়ানো।
সম্ভবত এ হলো কখন পৃথিবীর মৃত্যু তা তোমার জানা—
তা প্রজ্জ্বলিত হবে।
লুইস গ্ল্যুক ১৯৪৩ সালে নিউইয়র্ক সিটিতে জন্মগ্রহণ করেন। লং আইল্যান্ডে তার বয়োবৃদ্ধি। তিনি লেখাপড়া করেন সারাহ লরেন্স কলেজ ও কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। আমেরিকার সাম্প্রতিক গুণবিচারী ও মনস্বী কবিদের অন্যতম তিনি।
প্রায়োগিক নৈপুণ্য, সংবেদনা ও নৈঃসঙ্গ, পারিবারিক সম্পর্ক, বিচ্ছেদ এবঙ মৃত্যুর অন্তঃদৃষ্টি গ্ল্যুকের কবিতার প্রতিপাদ্য। তার কবিতা সম্পর্কে রবার্ট হাস বলেন, ‘সবচেয়ে খাঁটি এবং চূড়ান্ত গুণান্বিত লিরিক কবিদের একজন এখন লিখছেন। তিনি ২০২০ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। তার কবিতা অভ্রান্ত কাব্যিক কণ্ঠ, যা সাদামাটা সৌন্দর্য্য সৃষ্টি করে ব্যক্তিক অস্তিত্বের সর্বজনীনতায়।
লুইস গ্ল্যুকের কবিতার বইগুলোর মধ্যে রয়েছে—‘দ্য হাউজ অফ মার্শল্যান্ড’, ‘দ্যা গার্ডেন’, ‘ডিসেন্ডিং ফিগার’, ‘অ্যা ভিলেজ লাইফ’ ইত্যাদি।