বোনের স্বামীকে নিজের স্বামী পরিচয় দিয়ে ঢামেক থেকে আটককৃত এক দালালকে ছাড়াতে এসে র্যাবের কাছে ধরা পড়ল এক নারী। আজ রোববার (৫ সেপ্টেম্বর ২০২১) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) দালাল ধরতে অভিযান চালায় র্যাব। এ তথ্য সঙ্গে সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে হাসপাতালে থাকা অন্য দালালদের কাছে। এসময় তারা র্যাবের হাত থেকে বাঁচতে অনাত্মীয়কে আত্মীয় বা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন। তেমনই সাইফুল নামে এক দালাল আটক হলে তাকে ছাড়াতে এসে নিজেকে স্ত্রী পরিচয় দেন এক নারী। কিন্তু র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে আসল তথ্য।
র্যাব-৩ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বিষয়টি জানতে চাইলে ওই নারী বলেন, ‘স্যার, মাথা ঠিক নাই, তাই বোনজামাইরে স্বামী কইয়া লাইছি।’
বিষয়টি আরও পরিষ্কার হতে পাশেই দাঁড়ানো এক কিশোরীর কাছে ম্যাজিস্ট্রেট জানতে চান ওই নারী তার মা কি-না। এসময় কিশোরী বলেন, ‘উনি আমার মা না, আমার আপন খালা।’
রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে অভিযানের শেষ সময়ে এসে ঢামেকের প্রশাসনিক ভবনের দক্ষিণে অ্যাম্বুলেন্স গ্যারেজের বাইরে এমন দৃশ্যের অবতারণা হয়।
এর আগে কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করে সকাল ১০টা থেকে র্যাবের একাধিক সদস্য হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ ও আন্তঃবিভাগসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালান।
অভিযানে সংঘবদ্ধ দালাল চক্রের সদস্য সন্দেহে মোট ৪০ জনকে আটক করা হয়। পরে নাম-পরিচয় ও পেশা যাচাই-বাছাই করে ৩০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। ছেড়ে দেওয়া হয় ১০ জনকে।
র্যাবের অভিযান শেষে যখন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছিল, তখন ওই নারী ঢামেক হাসপাতালের দুটি চিকিৎসার টিকিট নিয়ে সেখানে হাজির হয়ে কান্নাকাটি শুরু করেন।
এসময় র্যাবের এক সদস্য জানান, সাইফুল নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। এ নারী এসে সাইফুলকে তার স্বামী ও সঙ্গের কিশোরীকে মেয়ে পরিচয় দিচ্ছেন। দুজনের কান্নাকাটি দেখে ওই ব্যক্তিকে ভুলে আটক করা হয়েছে ভেবে ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা করছিলেন ম্যাজিস্ট্রেট।
ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু জানান, আটক সাইফুলের কাছে তার স্ত্রীর নাম জিজ্ঞাসা করলে তিনি যে নাম বলেন তা ওই নারীর নামের সঙ্গে মিলেনি। একারণে ওই নারী ও কিশোরীকে বিভিন্নভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে কিশোরী জানান, সঙ্গে থাকা নারী তার মা নয়, আপন খালা। তবে তার বাবাকে সত্যিই আটক করা হয়েছে।
ম্যাজিস্ট্রেট আরও বলেন, দালাল চক্রের সদস্যরা বাঁচতে তাৎক্ষণিকভাবে অনাত্মীয়কে আত্মীয় বানিয়ে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য পাঠিয়ে দেন। আজও তারা এমনটা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু যাচাই করলে তারা ধরা পড়ে যায়। সুত্র : জাগো নিউজ
এফএ