তার পরকীয়া, গোপন চ্যাটিং ধরে ফেলি আমি। অপমানসূচক কথা আর মারধর ছিল আমার নিত্যকার উপহার। একইদিনে ৩০ বারের অধিক চড় মেরে লাথি দিয়ে আমাকে মেঝেতে ফেলেছিল। দেওয়ালে ধাক্কা দিয়ে মাথায় আঘাত দেওয়া শেষে আমার শ্বাসরোধ করে দিয়েছিল। আমি মরে যাইনি তবে শেষ পর্যন্ত আমি বেরিয়েছি ওই বিষাক্ত সম্পর্ক থেকে। এখনও ওই বিষের ট্রমা আমি বয়ে বেড়াই।
এক ভারতীয় নারী বর্ণনা করেছেন সহিংসতার শিকার হয়েও তিনি কীভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। তিনি বর্ণনা করেছেন কীভাবে একটি বিষ সম্পর্কে তিনি জড়িয়ে পড়েছিলেন। তিনি জানিয়েছেন কীভাবে তিনি ওই সম্পর্কের জাল ছিড়ে বেরিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘বিয়ে পাকাপাকি হওয়ার আগে তিনবার দেখা করেছি। প্রথম দেখায় সে জিজ্ঞেস করলো ফিটনেস সেন্টারে গিয়েও কেন আমার নিতম্ব এত ভারি? তার এমন প্রশ্নে আমি অবাক হয়ে গেলেও খুব গুরুত্ব দিয়ে ভাবিনি আমি। দুমাস পরেই বিয়ে হয়ে গেল আমাদের।’
সম্পর্কটি আমার জন্য বিপদ সংকেত তা দ্বিতীয়বার বুঝেছিলাম যখন সংক্রান্তির সময়ে টাকা পাঠানোর জন্য তার মা ফোন করেছিলেন। সেদিন রাতে আমি তার ভেতরের দৈত্যটাকে প্রথমবার দেখলাম। সে চিৎকার করছি।- তিনি যোগ করেন।
ভারতীয় এই জয়ীতা বলেন, তারপর তাকে হাতেনাতে ধরি যখন সে তার শৈশবের বান্ধবীর সাথে জড়িয়ে আমার সাথে প্রতারণা করছিল। বারবার মাফ চেয়ে বলেছিল যেন আমার বাবা মাকে এসব কথা না জানাই। তখনও বুঝতে পারছিলাম না আমি কী করব? এরপর আমি তিনটে রাত ঘুমোতে পারিনি।
তিনি বলেন, এরপর একদিন তাকে আমি বলি যেন তার ফোনের টেক্সটগুলো আমাকে দেখায়। সেদিন আমাকে সে কমপক্ষে ৩০টি চড় মারল। পেটে লাথি দিয়ে মেঝেতে ফেলে দিল আমাকে। এবং হুমকির স্বরে বলছিল যেন এ ঘটনাকাউকে না বলি। ওই ঘটনায় আমাদের সপ্তাহখানেক কথা বন্ধ ছিল। কিন্তু তখনও আমি কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি।
মনে পড়ে একদিন যখন আমরা শপিংয়ে গিয়েছিলাম একসাথে। তখন তাকে বললাম আমি বাড়ি সাজানোর কিছু জিনিস কিনতে চাই। সে আমাকে রাস্তার মাঝখানেই বলল– ‘ইউ আর অ্যা প্রিভিলেজড শিট। ঘটনা সেখানে থামল না। বাসায় এসেই সে আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করে। এখনও মনে করতে পারি সে আমার গলাকে এমন জোরে চেপে ধরেছিল আমার শ্বাস বন্ধ হয়ে অজ্ঞান হয়ে যাই। সে ততক্ষণ ধরে ছিল যতক্ষণ না অজ্ঞান হয়ে যাই। তিনি যোগ করেন।
তিনি বলেন, ওই ঘটনার পর সে আমাকে চলে যেতে বলে। তার বাক্য ছিল ‘ নাটক না করে বিদেয় হ’।
তিনি বলেন, সে আমার বাবা মাকে ডেকে বলে, আমাকে নিয়ে না গেলে সে মারধর করবে। আমার বাবা মা অবাক হয়ে যায়। বম্বে আসা পর্যন্তও তারা কিছু জানতেন না। আমি কখনও জানতে দিইনি।
দু বছর আমার এমনই জীবন ছিল। বিবাহ বিচ্ছেদ ও পারিবারিক সহিংসতার মামলাও করেছি। তবুও ওই ভয়ানক জীবনের ফ্ল্যাশব্যকে চলে যাই আমি। এখনও উদ্বেগ আমার পিছু ছাড়েনি। বন্ধুদের সহায়তায় আমি ট্রমা কাটিয়ে উঠছি।
হিউম্যানস অফ বোম্বেকে নিজের জীবনের না বলা কথাগুলো বলেছেন সাহসী এক ভারতীয় নারী