প্রিয়,
আপনার কাছে তো আমার সব কথা আধ খাওয়া চাঁদ। আপনে তো জানেন আমি এককালে ঢাকা শহর পায়ে হাঁইটা,ঘণ্টা রিকশায় ঘুইরা চিনছি – এ বাক্য কইলে আপনে চোখ উল্টায়ে ভাব নিবেন আপনার মনে নাই। এত জায়গায় যাই কিন্তু কোন বাড়ি আমার ঘর হয় না,কোন শহর আপন হয় না,কারণ এইসব জায়গায় আপনে নাই।
প্রিয়
যে জন্য এত বিতং সেটা বলি – আইজ মনে করেন পানি থেকে মাছ তুইলা ডাঙায় রাখবেন লগে লগে শুঁটকি হইয়া যাইব তেমন কিসিমের গরম। এর মধ্যে গেলাম এক বিচে। খাড়া রইদ,লোকে লোকারণ্য। মেলানিনের অভাব ঘুচাইতে যে যেমনে পারে রইদেরে আঞ্জা কইরা ধইরা বইসা,শুইয়া রইছে। এক বাড়ির সামনে খাড়াইলাম সে বাড়ি ১৯১৪ সালে তৈয়ার হইছে। খুঁইজা পাইতা এক গাছের নীচে বইলাম। বাতাস আছে,ছায়াও পাইলাম।
প্রিয়
চাইরদিকে এত সুন্দর অথচ লগে আপনে নাই। এখানকার বাড়িতে সেন্ট্রাল হিটিং এর কিছু ঘুলঘুলি টাইপ থাকে,এর ভেতরে চড়ুই পাখিরা বাসা বান্ধে,ঢুকে বাহির হয় – আমার আপনার বুকের মইধ্যে এইভাবে বিশ্বাস করেন ঢুইকা বইসা থাকার হাউশ জাগে। কত আতশবাজি চোখের জলে ভিজা যায়! কোন সুন্দর একা দেইখা কি পরাণ ভরে বলেন তো!
প্রিয়
বুকের মইধ্যে আপনে,চোখের রেটিনায় পঞ্চাশ রকমের আপনে – এসব সরায়ে আমি হাসি,মাইনষের সাথে সাত জনমের চিন পরিচয়ের আনন্দে মাতি। বেলা ফুরায়ে গেল,সাগরের জেটিতে কত জাহাজ বান্ধা,শুধু আমার দিলের বন্দরে জলের উপর জল ঝাঁপ দেয়,আপনারে নিয়া কোন নাও ভিড়ে না।
প্রিয়
এসব সময়ে বিধুর সি-গাল হইয়া খাড়া সাত আসমান ভেদ কইরা পলায়ে যাইতে গা ইচ্ছা করে। আপনে কেমনে এমন নির্বিকার নিষ্ঠুর হন? ফিরতে ফিরতে ভাবতেছিলাম আপনার অপেক্ষায় কেশ সাদা হইলো,চোখ ব্যথা,ঠোঁট পুড়লো নিকোটিনের বজ্রপাতে – আপনে কিছুই আমলে নিলেন না,কইলেন ‘দোষারোপ করবা না’। শুনেন,ভালোবাসা তো একটা দোষ ই,সেইটা আপনার উপর ভর করাইতে গেলে তো আরোপ হইবই। আপনারে শইল দিয়া চাইলাম না,হাজার হাজার কিলোমিটার দূর থেকে শব্দ দিয়া ছুঁইয়া থাকতে চাইলাম – সেটাও আপনে কাইড়া নিলেন। অথচ এই আপনে লাইলী মজনু, শিরি ফরহাদ,রাধা কৃষ্ণ,রূপা হিমু কত ভালা পান! আফসোস করেন তেমন প্রেম পাইলেন না বইলা। মানুষ অনেককিছু পাইয়াও বুঝে না। আপনের অনুভব রে আমি শ্রদ্ধা করি – তাই কোন জোরজবরদস্তি নিয়া আপনার দরজায় খাড়াই নাই।
প্রিয়
আমি তেপান্তরের মাঠে একাই আছি দাঁড়ানো বহুকাল;দুই হাত পিছনে বাইন্ধা,কারণ জানি ঝাঁপায়ে পড়ার মতো কোন ছাতি আমার লাইগা উন্মুক্ত নাই।
আমার এই দীর্ঘশ্বাস আপনারে না স্পর্শ করুক এটুকুই প্রার্থনা।
ইতি
আপনার উপেক্ষায় ও হাসতে পারা ‘আমি’