প্রিয় প্রেমাবতার
ষোল হাজার দিন পৃথিবীর পথে আমারও হাঁটা হইছে।
বর্ষায় ভিজছি,রোদে জ্বলছি,ঠাণ্ডায় উষ্ণ চায়ের কাপ হাতে আমারও শুনা হইছে বহু মন উদাস করা গান। জীবিকার তাগিদে পূর্ণবয়সে দু’হাতে টাকা যেমন কামাইছি তেমন হাজার মানুষের সাথে উঠাবসা আমিও সারছি। মানুষ কোন সম্পর্ক এই মহাগোলযোগের যুগে দরকারে করে,আর কোনটা তার দিলের চাহাত থেকে রাখে সে বুঝার জন্য যে ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় তার খোসা ছাড়ানো বেসিক ইন্সটিংক্ট আমার মস্তিষ্কের হার্ডডিস্কে লাই ডিটেক্টরের ক্ষীপ্রতায় ঘূর্ণন তোলে।
জরুরতের সাথে চাহাত যুক্ত না হইলে সে সম্পর্ক নদী পারাপারের নৌকা ও মাঝির লাহান হইয়া রয় – একবার কূলে পৌঁছাইলে কে খোঁজ নেয় নাওয়ের,কে ই বা জানতে চায় বৈঠা টাইনা মাঝির পেশীর কোন জায়গায় টান ধরছে!
আপনারে আগেও বলছি প্রিয় প্রেমাবতার ,আমার ভাঙচুরের নির্মাণের কোন আকাঙ্ক্ষা নাই। শুধু অসমম্মান ও অশ্রদ্ধা কইরেন না। আপনি সেই অনুরোধ শুইনাও শুনলেন না। মাছ মারার কোঁচ দিয়া একের পর এক ঘাঁই মাইরা কন – এবার একলা দুপুরে ঘু ঘু হইয়া ডাকো! হয় না এমন, প্রেমাবতার হয় না।
মহাজন শইল্যে চামড়া দিছেন,সেখানে বিষাদের কুয়াশা জমে বরই পাতায় জলের আঁকিবুকিতে; দিছেন অদৃশ্য অন্তর বইলা আরেক কুঠুরি – সেখানে বিশ্বাস করেন মন খারাপের নীল আলো অহর্নিশ জ্বইলা থাকে। আপনে আমার না হইলেন,নিঃশ্বাসের দূরত্বে না থাকলেন – কথার বিষ মাখানো তীরে আমারে খেজুর কাঁটায় মোরব্বা করতে গেলেন কেন? সব স্মৃতি ফিকা হইয়া যায়,রক্তশূন্য পোয়াতির অবয়ব নিয়া মনে পড়া কাটারির ধার কমে – কিন্তু শব্দের ছুরি প্রেমাবতার এফোঁড়ওফোঁড় কইরা টুপটুপ কইরা শইল্যের তাবত রক্ত দেখেন ঝরায়ে ফালাইলো।
এ যাত্রায় মনে হয় প্রেমাবতার আর সাঁতরাইয়া কোন কূলে উঠা যাইব না। আপনারে আমি ভালোবাসায় ক্ষমা দিয়া গেলাম। আপনের লাগুক বা না লাগুক,তবু দিলাম। কোনদিন যদি অবকাশ পান এইসব ছদ্মবেশের ব্যস্ততা থেকে দেইখেন কত অল্প আপনে একজনকে দেন নাই – তখন নিজেরে অন্তরকেপ্পন কইয়া মনে মনে কপাল চাপড়ায়েন।
দুইন্যায় বোকা না হইলে কেউ মাইনষেরে প্রয়োজন ছাড়া ভালোবাসে না। আসছে শতাব্দীতে রাহম বুঝাইতে মাইনষেরে দেখবেন আমগো মতো কারও চরিত্রই বাচ্চাগো পড়াইতে হইব,অডিওবুকে মাইনষে শুনব – ভালোবাসা ও প্রেম একধরনের বিভ্রান্তি হিসেবে গত শতকে বিরাজমান ছিল বেশকিছু মানুষের মাঝে; তারা আধুনিক সভ্যতার নিরিখে ‘বোকা’ হিসেবে পরিগণিত হইলেও তাদের কারণেই পৃথিবী নামক গ্রহে অনেককাল মানুষ জৈবিক কান্না,হাসির দোল দোলানো দিন অতিবাহিত করতে পারছিলো।
প্রেমাবতার, আপনার বুকে মাথা রাইখা কে শুনে হৃৎপিণ্ডের ধুকপুক খুউব জাইনা তারপর মরতে ইচ্ছা করে। আপনে আমারে রাখী বান্ধার আগেই ইলাহির কসম আমি এই বেনামি পত্র দিয়া হারায়ে গেলাম চিরতরে। আমারে খুঁইজেন না ভুলেও কোন বর্ষাবরণে,কবিতার আগুনজ্বলা বারবিকিউ চাঁদের আড়ালে।
ইতি আপনারে ভুলতে চাওয়া ‘আমি’