২০১৫ সালে মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জে শিশু অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় এক আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় হয়েছে। মামলার রায়ে অপর দুই আসামি খালাস পেয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি, ২০২১) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-০৭ এর মাননীয় বিচারক মুন্সি আবদুল মজিদ (জেলা জজ) প্রকাশ্য আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল ৭-এর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) খন্দকার আরিফুল আলম রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সাজাপ্রাপ্ত ধর্ষকের নাম আইনুল হাসান প্রকাশ রনি। খালাসপ্রাপ্ত দুজন হল মোহাম্মদ জানু মিয়া ও মোহাম্মদ সায়েম। তারা একই উপজেলার বাসিন্দা।
জোরারগঞ্জ থানার মামলা সূত্রে জানা যায়, ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৫ সালের ১৫ মে। নবম শ্রেণি পড়ুয়া ১৫ বছর বয়সী ভিকটিম মেয়েটি প্রাইভেট পড়তে যাচ্ছিল। পথে জোরারগঞ্জ থানাধীন পূর্ব হিঙ্গলি কদমতলা বারইয়ারহাট করেরহাট পাকা সড়কের উপর পৌঁছলে তাকে জোর করে অপহরণ করে নিয়ে যায় তিন আসামি। পরে ভিকটিম ছাত্রীর মা থানায় হাজির হয়ে তিনজনের নাম ও অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। ওই অভিযোগটিকে জোরারগঞ্জ থানা এফআইআরে রেকর্ডভুক্ত করে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল ৭-এর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) খন্দকার আরিফুল আলম বলেন, ২০১৫ সালের একটি ধর্ষণ ও অপহরণ মামলায় আসামি আইনুল হাসান রনিকে অপহরণের জন্য ১৪ বছর কারাদণ্ড ও ধর্ষণের অপরাধে যাবজ্জীবন কারদণ্ড দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-০৭ এর মাননীয় বিচারক মুন্সি আবদুল মজিদ (জেলা জজ)।
তিনি বলেন, ভিকটিমের মা ধর্ষণ মামলা দায়েরের পর পুলিশ ২২ ধারায় ভিকটিমের জবানবন্দি নেওয়া ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে ২০১৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর অভিযোগ পত্র জমা দেয়। আসামি আইনুল হাসান, মহাম্মদ সায়েম এবং নাঈম উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে জানিয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ,২০০০ এর ৭ /৯(১)/৩০ ধারায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ। ২০১৮ সালের ১ অক্টোবর বিজ্ঞ ট্রাইব্যুনাল উক্ত ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল ৭-এর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) খন্দকার আরিফুল আলম আরও বলেন, অভিযোগপত্রের ১৫ জন সাক্ষীর মধ্যে বাদি, ভিকটিম, ডাক্তার এবং তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ মোট ৮ জন সাক্ষী ট্রাইব্যুনালে সাক্ষী হিসেবে পেশ করেন রাষ্ট্রপক্ষ। সকল সন্দেহের ঊর্ধ্বে রাষ্ট্রপক্ষ আইনগত সাক্ষ্য ও যুক্তিতর্ক করে আসামিদের অপরাধ প্রমাণ করতে পারায় বিজ্ঞ ট্রাইব্যুনাল আইনুল হাসান হাসান প্রকাশ রনিকে অপহরণের জন্য (ধারার ৭) ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং দশ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেন এবং ধর্ষণের জন্য আইনের ৯(১) ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং বিশ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেন। অনাদায়ে আরও ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। অপর দুই আসামিদের খালাস প্রদান করেন আদালত।