ইমেলের মাধ্যমে প্রথমে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ, এরপর নিখোঁজ। তারপর ফিরে এসে জানান দেন নিজের উপস্থিতির। গত কয়েক মাসে এত কিছু ঘটে যাওয়ার পরও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে নিজের নিপীড়নের কথা অস্বীকার করেন চীনা টেনিস তারকা পেং শুয়াই।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) চীনের বেইজিংয়ের একটি হোটেলে ফরাসি সংবাদপত্র লে’কুইপেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের ওপর যৌন নিপীড়নের বিষয়টি অস্বীকার করেন পেং।
ডাবলসে একসময় বিশ্বের এক নম্বর ছিলেন চীনের টেনিস তারকা পেং শুয়াই। গত বছরের নভেম্বরে চীনের সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী ঝ্যাং গাওলির বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ করেন তিনি। নির্যাতনের অভিযোগ তোলার পর প্রায় তিন সপ্তাহ জনসম্মুখে দেখা যায়নি ৩৫ বছর বয়সী পেংকে।
এর আগে চীনের সবচেয়ে বড় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ওয়েইবোয় গত ২ নভেম্বর এক পোস্টে টেনিস দ্বৈতের সাবেক নাম্বার ওয়ান পেং অভিযোগ তোলেন, ‘জানি পাথরের দিকে ডিম ছোড়ার মতো ব্যাপার হবে। তবু অভিযোগ করছি। আমার ওপর কীভাবে যৌন অত্যাচার চালানোর চেষ্টা হয়েছে, তা সবার জানা উচিত।’ টেনিসবিশ্বকে নাড়িয়ে দেওয়া ওই পোস্ট ৩০মিনিট পরই সরিয়ে ফেলা হয়।
এরপর অনেক জল ঘোলা শেষে পেং শুয়াইয়ের মুখোমুখি হয় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। ফরাসি দৈনিক লে‘কুইপের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া যৌন নিপীড়নের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি সেটি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি কাউকে কখনো বলিনি যে আমি কোনোভাবে যৌন নিপীড়নের শিকার।’
নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা বিষয়টিকে তিনি ভুল বোঝাবুঝি উল্লেখ করে বলেন, ‘অনুভূতি, খেলাধুলা এবং রাজনীতি তিনটি আলাদা বিষয়। আমার ব্যক্তিগত সমস্যা বা প্রেমসম্পর্কিত বিষয়ের সঙ্গে খেলাধুলা বা রাজনীতিকে জড়ানো উচিত নয়।’
সাক্ষাৎকারে তিনি আরও যোগ করেন, খেলাধুলার সঙ্গে রাজনীতিকে টানা উচিত নয়। কারণ, খেলাধুলার পরিবেশ নষ্ট হয়, ক্রীড়াবিদরা তাদের ইচ্ছাশক্তি হারিয়ে ফেলেন।’
উল্লেখ্য, তিন বছর আগে চীন সরকারের উপপ্রধানমন্ত্রী ঝ্যাং গাওলি তার ও তার স্ত্রীর সঙ্গে টেনিস খেলতে আমন্ত্রণ জানান। বাড়িতে ডাকার পর তার সঙ্গে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক গড়েন ঝাং। তবে আগে ঝাংয়ের সঙ্গে তার একটা সম্পর্ক ছিল বলেও জানান পেং।
বর্তমানে চীনের বেইজিংয়ে চলছে শীতকালীন অলিম্পিক। আসর যেন সমালোচনার মুখে না পড়ে, তাই হয়তো পেংয়ের এই মত বদলানো বলে অনেকের ধারণা। তা ছাড়া তার পোস্টটির পর চীনে মেয়েদের টেনিস আয়োজনও প্রায় নিষিদ্ধের পথে ছিল। সবকিছু মিলিয়ে দেশের স্বার্থে হতে পারে তার এই দ্বিমত।
চাইনিজ তাইপের শে সু-ওয়ের সঙ্গে জুটি বেঁধে ২০১৩ উইম্বলডন ও ২০১৪ ফরাসি ওপেনের দ্বৈতে শিরোপা জেতেন পেং। ২০১৪ ইউএস ওপেনের এককে সেমিফাইনালেও উঠেছিলেন। ২০২০ সালের মার্চের পর আর ডব্লিউটিএ-এর কোনো টুর্নামেন্টে খেলেননি তিনি।