গণধর্ষণের পর শ্বাসরোধে খুন করা হয়েছিল শিশুকন্য ফাতেমা আকতার মীমকে
সময়টি ছিল ২০১৮ সালের ২২ জানুয়ারির বিকেল। নয় বছরের ছোট্ট শিশুকন্যা ফাতেমা আকতার মীম বাসা থেকে খেলতে বের হওয়ার পর তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। অনেক খোঁজাখুঁজির পর রাতে এলাকার একটি দ্বিতল ভবনের ছাদের সিঁড়িতে মিলল ছোট্ট ফাতেমা মীমের লাশ। আটজনের সংঘবদ্ধ ধর্ষণে লাশ হয়ে পড়ে ছিল ফাতেমা মীম। ঘটনাটি ছিল চট্টগ্রাম নগরের আকবর শাহ এলাকার।
গণধর্ষণে নিহত হওয়া শিশুটির মায়ের দায়ের করা মামলায় সোমবার (১৪ ডিসেম্বর, ২০২০) সোমবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জামিউল হায়দার আট আসামির মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আটজন হলেন মইনুল ইসলাম, বেলাল হোসেন, হাসিবুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম, মোহাম্মদ হাসান, মো. সুজন, মো. মেহেরাজ ও শাহাদাত হোসেন। রায় ঘোষণার সময় আদালেতে আসামি শাহাদাত হোসেন ছাড়া অন্য আসামিরা উপস্থিত ছিল। অন্য আসামি শাহাদাত ২০১৮ সাল থেকেই পলাতক।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আটজন হলেন মইনুল ইসলাম, বেলাল হোসেন, হাসিবুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম, মোহাম্মদ হাসান, মো. সুজন, মো. মেহেরাজ ও শাহাদাত হোসেন। রায় ঘোষণার সময় আদালেতে আসামি শাহাদাত হোসেন ছাড়া অন্য আসামিরা উপস্থিত ছিল। অন্য আসামি শাহাদাত ২০১৮ সাল থেকেই পলাতক।
দলবদ্ধ ধর্ষণের পর ঘটনা গোপন রাখার জন্য শিশুটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। আসামিদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত আটজনকে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এম এ নাসের উইম্যানভয়েসবিডিকে বলেন, আসামিরা শিশুটিকে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে অপহরণ করে। দলবদ্ধ ধর্ষণের পর ঘটনা গোপন রাখার জন্য শিশুটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। আসামিদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত আটজনকে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন। এছাড়াও রায়ে প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ডও দিয়েছেন।
মামলার এজাহারের বিষয় উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এম এ নাসের বলেন, লাশ উদ্ধারের পর শিশু ফতেমা মীমের মা বিবি রাবেয়া বাদি হয়ে মামলা করলে সাতজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর আট আসামির মধ্যে ছয়জন আদালতে ১৬৪ ধারার অধীনে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তদন্ত শেষে সাতজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ। এরপর ২০১৯ সালের ২৬ মে আট আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে আদালত।
আসামিদের সাথে নিহত শিশুর মায়ের পূর্ব শত্রুতার বিষয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এম এ নাসের আরও বলেন, মূলত ওরা ধর্ষণের পর লোক জানাজানির ভয়ে শিশুটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে ‘অ্যনিমিটি’ (শত্রুতা) এস্টাবলিশ করতে চেয়েছিল আসামিপক্ষ। সকল সাক্ষীদের জেরা জবানবন্দি শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাদের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন।
রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিল। তাদের রায় পড়ে শোনানো হয়েছে
এম এ নাসের বলেন, রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিল। তাদের রায় পড়ে শোনানো হয়েছে। এরপর আসামিদের কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে নিজের শিশু কন্যার ধর্ষক ও খুনীদের বিরুদ্ধে ফাঁসির রায় শুনে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ফাতেমা মীমের মা বিবি রাবেয়া। তিনি বলেছেন, ‘উচ্চ আদালতে যেন এ রায় বহাল থাকে। আমার মেয়ের মত আর কেউ যেন নিজের মেয়ের এমন মৃত্যু না দেখে।