এ প্রতিবাদ অন্যরকম। এটি ছিল টপলেস প্রতিবাদ বা উর্ধ্বাঙ্গ অনাবৃত রাখা নারীর প্রতিবাদ। তাদের নগ্ন পিঠে জার্মান ভাষায় লেখা হল ‘স্টপ্ট ফেমিজিদে’ মানে নারী হত্যা বন্ধ কর। নগ্ন ওই বুকে কোন যৌনতার আবেদন নয় বরং কালো রঙের উপর লিখেছিল খুন হওয়া নারীদের নাম। ১৭ আগস্ট জার্মান সংবাদমাধ্যম ‘এমা’ থেকে এসব তথ্য পাওয়া যায়।
Heute haben 50 Frauen am Brandenburger Tor gegen Femizide demonstriert. Mindestens 115 Frauen wurden dieses Jahr in Deutschland getötet. #femen #keinemehr #savexx #IstanbulConvention #NiUnaMenos #pasunedeplus #brandenburgertor #stopptdastötenvonfrauen #femizid #femicide pic.twitter.com/qP5qU8z0cO
— FEMEN Germany (@FEMENGermany) August 15, 2020
মৃতদের সম্মান জানাতে ফুল নেওয়ার প্রথা থাকলেও সেদিন তারা কেউ ফুল নিয়ে বের হয়নি। ওরা দলবেঁধে বেরিয়েছিল মৃতদেহ বহনে ব্যবহৃত ব্যাগ নিয়ে। কালো রঙের ওই ব্যাগগুলোতে ধবধবে শাদা অক্ষরে লেখা ছিল স্বামীর হাতে খুন হওয়া বিভিন্ন নারীর নাম। এমনই অন্যরকম প্রতিবাদের ঘটনাটি ঘটেছে জার্মানির বার্লিন শহরে।
ব্র্যান্ডেনবার্গ গেটে এসে তারা হাতে থাকা মৃতদেহের ব্যাগগুলো সামনে রাখে আর সমস্বরে চিৎকার করে বলে ‘পুরুষ প্রতিদিনই নারী খুনে উদ্যত হয়।’
প্রতিবাদী এ নারীরা বিশ্বাস করেন নারীর বিরুদ্ধে অন্যায়ে নিরবতাই হল বড় নৃশংসতা। উর্ধ্বাঙ্গ নগ্ন রেখে তারা প্রতিবাদের সংকেত দিয়েছে। জার্মানিতে প্রতিদিন একজন নারী তার স্বামী বা প্রাক্তনের হাতে খুন হন। তারা জানান, জার্মান সরকার নারী হত্যা ও গৃহ নির্যাতনকে ব্যক্তিগত ব্যপার বলে মনে করে। যদিও দেশটি নারী সুরক্ষার আন্তর্জাতিক সনদ ইস্তাম্বুল কনভেনশনটি অনুমোদন করেছিল।
প্রতিবাদে অংশ নেওয়া ক্রিস্টিনা উল্ফ বলেন, জার্মানিতে নারীহত্যা খুব সাধারণ ব্যপার। এ বছরেই ১৪৪ জন নারী পুরুষের বিদ্বেষের কারণে খুনের শিকার হয়েছেন। অনুমোদন দিয়েও জার্মান সরকার ইস্তাম্বুল কনভেনশন বাস্তবায়ন করছে না।
এর আগে ২০১৯ সালে এভাবেই টপলেস (অনাবৃত উর্ধ্বাঙ্গ) অবস্থায় প্রতিবাদ করেছিলে ফ্রান্সের নারীরা।
উল্লেখ্য, নারীর অধিকার বিষয়ে ‘কনভেনশন টু প্রিভেন্ট অ্যান্ড কমব্যাট ভায়োলেন্স এগেইন্সট উইম্যান অ্যান্ড ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স’- যা ইস্তাম্বুল কনভেনশন নামে পরিচিত। এটিকে জার্মানি অনুমোদন দিয়েছে ২০১৭ সালে। এখনও সেটি কার্যকর করতে কোন পদক্ষেপ নেয়নি দেশটির সরকার। জার্মানি এখনও নারী ইস্যুকে রাজনৈতিক চোখে দেখতে পারেনি। এছাড়াও নারীর প্রতি প্রথাগত বিদ্বেষ ও ঘৃণার কারণে এমনটি ঘটছে বলে প্রতিবাদে অংশ নেওয়া নারীরা দাবি করেছেন।