১৭ দিনের মাথায় দুটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটলো খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার হাজীগ্রাম এলাকায়। সদ্য বিয়ে হওয়া ১৮ বছরের নববধূ বেলেঘাট এলাকা থেকে পায়ে হেঁটে বাড়ি যাচ্ছিল। পথেই কয়েকজন যুবক এসে তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে সারভাইবার নারীকে তারা ঘটনা গোপন রাখতে বলে হুমকি দেয়। ওই নববধূ তার মাকে ঘটনা জানালে ঘটনার রাতেই থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
গত মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর,২০২০) দিঘলিয়ার মৎস্যঘের এলাকায় গণধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে। এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর একই এলাকার আরও এক নববধূ নিজের বাড়িতে ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন।
পুলিশ জানায়, স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান মির্জার ছেলে ডালিম সরদার (৩০) ও তার দু-তিনজন কুকর্মের সহযোগী ওই নববধূকে অপহরণের পর গণধর্ষণ করে।
এ ব্যপারে দিঘলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আহসানউল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘সারভাইবার সেনহাটি কাটানি পাড়া এলাকার মেয়ে। তিনি বেলেঘাট থেকে পায়ে হেঁটে বাড়ি যাচ্ছিলেন। তার পথরোধ করে স্থানীয় বখাটে ডালিম ও তার সঙ্গীরা। সেখোন থেকেই তাকে তুলে নিয়ে পার্শ্ববর্তী মৎস্যঘের এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানেই তার উপর জোরপূর্বক গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ধর্ষণ শেষে ধর্ষকরা সারভাইভার নারীকে বাড়িও পৌঁছে দেয়। সাথে জানিয়ে দেয় গণধর্ষণের ঘটনাটি যেন কেউ জানতে না পারে। ভীত সন্ত্রস্ত সারভাইভার নারী বাড়িতে গিয়ে নিজের মায়ের কাছে ঘটনা জানায়। সে রাতেই সারভাইভার নারীকে দিঘলিয়া থানায় এনে লিখিত অভিযোগ দেয় পরিবার।
বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) সারভাইভর নারীর মা বাদি হয়ে দিঘলিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে স্থানীয় মির্জা মেম্বারের ছেলে ডালিম সরদারসহ অজ্ঞাতনামা আরও দু-তিনজনের নামে মামলা করেন। মামলা নম্বর ৯। দিঘলিয়া থানা পুলিশ আসামি ডালিমকে গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
এর আগে, গত ১২ ডিসেম্বর পার্শ্ববর্তী বাতিভিটা এলাকায় অপর এক নববধূকে (১৮) বাড়িওয়ালা নুরু মোড়ল (৪৫) দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে ধর্ষণ করে নববধূকে। ঘটনাটির ১৭ দিনের মাথায় এক কিলোমিটার এলাকার মধ্যে আবারও ধর্ষণের ঘটনা ঘটল।
১৭ দিনের মাথায় দুটি ধর্ষণ হওয়ায় এলাকায় প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। প্রতিবাদে সামাজিক সংগঠন আলোর মিছিল ৩০ ডিসেম্বর বিকেল ৩টায় দিঘলিয়া উপজেলা চৌরাস্তা মোড়ে মানববন্ধন করে।
বক্তারা বলেন, আইনের কঠোর প্রয়োগ বাস্তবায়ন না হওয়ায় ‘ধর্ষণ’ এখন মহামারিতে পরিণত। এ কারণেই একটির পর আরও একটি ধর্ষণ ও গণধর্ষণের ঘটনা ঘটছে।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন আলোর মিছিলের উপদেষ্টা জি এম আকরাম, সৈয়দ জাহিদুজ্জামান, শেখ রবিউল ইসলাম রাজিব, আব্দুল্লাহ চৌধুরী, মনিরুল ইসলাম মোড়ল, কিশোর কুমার দে, হাসিবুর রহমান, মহিউদ্দিন পারভেজ, সালাউদ্দিন বাবু, আসমা হোসেন, সাদিয়া সিদ্দিকা পাপড়ি, রাসেল কবির, রাজিবুল রেজোয়ান, রেদোয়ান আহমেদ হামিম, ফিরোজ শেখ।